জাবিতে পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি
জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মইনুল রাহাত বলেন, “যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে আমাদের জুলাই আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেখানে যদি অযৌক্তিক বৈষম্যমূলক কোটা এখনো বলবৎ থাকে, সেটাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কখনই মেনে নেবে না। আমরা মনে করি, পোষ্যকোটা আমাদের জুলাই আন্দোলনের স্পিরিটের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে।”
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শামিম আফজাল বলেন, “দেশের ১৮ কোটি মানুষের ট্যাক্সের টাকায় চলা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লেভেলের বিদ্যাপিঠগুলোতে একটা শ্রেণী অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ করবে, এটা আমরা কখনই দেখতে চাই না। আমরা প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, আমাদের বৈষম্যহীন বাংলাদেশে একটা নির্দিষ্ট শ্রেণিকে পোষ্য কোটা নামক অযৌক্তিক কোটার মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণ মেধাবীদের বৈষম্যের শিকার করা চলবে না।”
ছাত্র অধিকার পরিষদ জাবি শাখার সংগঠক ইয়াসিন আরাফাত রাজু বলেন, “আমাদের জানা মতে, প্রতিটা বিভাগে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ চারজন শিক্ষার্থী পোষ্যকোটায় ভর্তি হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রশ্ন, তারা এখন পর্যন্ত কেন এ অনায্য নিয়ম জারি রেখেছে? শিক্ষার্থীরা আরো আগে থেকেই এ অনায্য কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু প্রশাসনের এখন পর্যন্ত টনক নড়ছে না। আমাদের দাবি সুস্পষ্ট, এ অনায্য, অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল হোক।”
সমাপনী বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক ইয়াহিয়া জিসান বলেন, “গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যখন আমাদের একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, একটি বৈষম্যহীন ক্যাম্পাস গড়ার কথা, ঠিক তখন আমাদের আবার কোটার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। এর থেকে পরিতাপের বিষয় আর কি হতে পারে!”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বলা হয়েছিল, সব বিভাগ মিলে সর্বোচ্চ ৩০-৪০ জনের বেশি পোষ্য কোটায় ভর্তি হতে পারে না। অথচ নতুন ব্যবস্থায় যে সুযোগ তৈরি করা হয়েছে, তাতে প্রায় ১৪২ জন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটায় ভর্তি হতে পারবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রায় ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পোষ্য কোটার মাধ্যমে জাবিতে ভর্তি হতে পারবে।”
তিনি আরো বলেন, “পোষ্য কোটায় যারা ভর্তি হয়, তাদের বড় একটি অংশকে আমরা অন্যায়-অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয় বিধান অনুযায়ী পোষ্য কোটাধারীদের হলে থাকার সুযোগ নেই। অথচ তাদের একটি বড় অংশ হলে অবস্থান করে। এজন্য আমরা গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আমরা এ পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল চাই।”
“ইতোমধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিল হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটার কবর রচনা না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন অব্যাহত রাখবো,” যুক্ত করেন জিসান।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী