শহীদ নজির স্মরণে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নানা কর্মসূচি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রথম শহীদ নজির আহমদের ৮২তম শাহদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কবর জিয়ারতসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় আজিমপুর কবরস্থানে ‘সাম্প্রাদায়িকতা বিরোধী শহীদ নজির আহমদ দিবস’ হিসেবে তার সমাধিতে গিয়ে কবর জিয়ারত করেন তারা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সাংগঠনিক প্রধান মো. শফিউর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক রাবেয়া আকতার, সহকারী সদস্য সচিব ডা. মাসুম বিল্লাহ, সদস্য মো. মামুনুর রশীদ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়ামিন সরকার, ঢাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, নিয়াজ আহমদ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব মো. ফরহাদ আহমেদ আলী প্রমুখ।

এ উপলক্ষে শহীদ নজিরের রূহের মাগফিরাত কামনায় বাদ যোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে, শহীদ নজির আহমদের নামে কলাভবনের নামকরণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। বিকালে উপাচার্যের হাতে তার নিজ কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি তুলে দেন তারা।

স্মারকলিপির অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহিদ হওয়ায় প্রশাসনিকভাবে ‘সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী শহীদ নজির আহমদ দিবস’ পালন, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনে সরকারকে প্রস্তাব প্রদান এবং ঔপনিবেশিক আমলে মুসলমানদের উপর পরিচালিত শোষণ-নির্যাতন-সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বিষয়ক অধ্যয়নে একটি স্টাডি সেন্টার প্রতিষ্ঠা।

এসব দাবির প্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “আমরা ইতিহাসে ভূমিকা রাখা সবার সম্মান ফিরিয়ে দিতে চাই। শহীদ নজির আহমদের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর অ্যাসেম্বলিতে পর্যালোচনা করা হবে। ছাত্রদের দাবির যথার্থতা পাওয়া গেলে আমরা অবশ্যই শহীদ নজির আহমদকে সম্মান জানাব।

১৯৪৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে (বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুরাতন ভবন) ক্লাস চলাকালে মুসলমান ছাত্রদের ওপর কংগ্রেসপন্থী সাম্প্রদায়িক হিন্দু ছাত্ররা হামলা চালায়। তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে শহীদ নজিরকে হত্যা করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে শহীদ নজির আহমদ হত্যাকাণ্ড ছিল শিক্ষাঙ্গনের প্রথম সন্ত্রাসের ঘটনা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র ও অল ইন্ডিয়া মুসলিম ছাত্র পরিষদের শীর্ষ নেতা ছিলেন।

শহীদ নজির ঔপনিবেশিক জমানায় তৎকালীন নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে ফেনী) আলিপুর গ্রামের একটি দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।