ঢাবিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণস্বাক্ষরে ব্যাপক সাড়া
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও দোসর দলগুলোর নিষিদ্ধ করার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও নাগরিকগণ অংশগ্রহণ করেছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান ছাত্রজনতার গণঅবস্থান কর্মসূচির একাদশতম দিনে এ গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
গণঅবস্থানের সংগঠকরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৩ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ও নাগরিকগণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। গণঅবস্থান চলাকালে প্রতিদিনই গণস্বাক্ষর গ্রহণ করা হবে। এছাড়া মঙ্গলবার থেকে জুলাই গণহত্যাসহ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সংঘটিত নির্যাতন-নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করতে গণএজাহার কর্মসূচি শুরু হবে।
সংগঠকরা আরো জানিয়েছেন, বিগত ১৬ বছরের নির্যাতন নিপীড়নের ভয়াবহতা অনুযায়ী ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে তেমন মামলা দায়ের হয়নি। এমনকি জুলাই বিপ্লবে ২ হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতা শহীদ হলেও সব খুনীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এজন্য মূলত পুলিশের হয়রানি, অনীহা ও সহযোগিতার অভাব রয়েছে।
আর অন্তর্বর্তী সরকারের দিক থেকেও মজলুমদের মামলা করাতে কোন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। গণএজাহার কর্মসূচির মাধ্যমে অচলায়তন ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজাহারের তথ্য সরকার ও আদালতের কাছে জমা দিয়ে বিচার নিশ্চিত করা হবে।
গণঅবস্থানে অংশ নিয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পরিচালনা করেন, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, গালিব ইহসান, সদস্য রাজু আহমেদ সদর , হাফেজ মোহাম্মদ শাকিল আহমেদ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্য সচিব ফজলুর রহমান।
অন্যদের মাঝে আরো ছিলেন, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব ইশতিয়াক আহমেদ ইফাত, সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, হামিম হোসাইন শুভ, ঢাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়াত, সহকারী সদস্য সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম সাকিব, সদস্য সচিব মো. ফরহাদ আহমেদ আলী প্রমুখ।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে আওয়ামী লীগ ও দলটির মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গণঅবস্থান কর্মসূচি চলছে। ছাত্রদলের ঢাবি শাখার দুই নেতা মো. ওমর ফারুক ও আবু সাঈদের অনশনের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে এতে সম্পৃক্ত হয় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জুলাই বিপ্লবের শহীদ রানা তালুকদারের পরিবার এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালানোর আহ্বান জানান। তার অনুরোধে অনশন ভেঙে লাগাতার গণঅবস্থান চলছে।
গণবক্তৃতা, আবৃত্তি, জুলাই গণহত্যার তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও র্যাপ সঙ্গীত পরিবেশনসহ নানা আয়োজনে চলছে এ কর্মসূচি। গণঅবস্থানের দশম দিন শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী