ঢাকা     শনিবার   ২২ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ৯ ১৪৩১

জুলাই অভ্যুত্থানে ‘হামলায় জড়িত’ জাবির ২৯৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাসপেন্ড

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ১৮ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ১৮:০৬, ১৮ মার্চ ২০২৫
জুলাই অভ্যুত্থানে ‘হামলায় জড়িত’ জাবির ২৯৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাসপেন্ড

জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় মদদ দেওয়ায় ৯ জন শিক্ষক ও  ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার (সাসপেন্ড) করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন।

সোমবার (১৭ মার্চ) প্রায় চৌদ্দ ঘণ্টাব্যাপী সিন্ডিকেট সভা শেষে রাত ৩টার দিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।

সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৫-১৭ জুলাই জাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মদদ দেওয়ায় ৯ জন শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ১৪-১৭ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকায় ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

বহিষ্কৃত এসব শিক্ষার্থীর সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন বলে জানা গেছে।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক ও সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য একটি স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ওই হামলার ঘটনায় আরো ১০ জন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা ও অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ৯ শিক্ষকের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ ইস্রাফিল আহমেদ রঙ্গন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান, ইতিহাস বিভাগের  অধ্যাপক ও শেখ হাসিনা হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ হোসনে আরা বেবী, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ নাজমুল হোসেন তালুকদার, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক তাজউদ্দীন শিকদার।

এছাড়াও যে ১০ জন শিক্ষকের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তারা হলেন- অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রভাষক কানন কুমার সেন, ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক পলাশ সাহা, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফি মোহাম্মদ তারেক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম খোন্দকার, অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনির উদ্দিন শিকদার, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছায়েদুর রহমান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার খসরু পারভেজ, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিবুর রৌফ শৈবাল, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক এ এ মামুন।

বহিষ্কৃতদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িতদের সনদপত্র স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়েছেন এমন শিক্ষার্থীদের ফলাফল স্থগিত এবং বিশেষ ক্ষেত্রে সনদপত্র স্থগিত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। আর নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ এর আওতায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মকর্তারা না পড়লেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দায়ের কারণে অবসরপ্রাপ্তদের সংশ্লিষ্টতা যেখানে আছে, সেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার দায়ে জাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম এবং রেজিস্ট্রার আবু হাসানের পেনশন তদন্ত কার্যক্রম ও বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

জুলাই হামলার সংশ্লিষ্টতার ঘটনায় দুইজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়