ঢাকা     বুধবার   ১৯ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ৬ ১৪৩১

ভিক্টর পরিবহনের বাসে জবি ছাত্রীকে হেনস্তা, তারপর যা হলো

জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩১, ১৮ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ১৮:০০, ১৮ মার্চ ২০২৫
ভিক্টর পরিবহনের বাসে জবি ছাত্রীকে হেনস্তা, তারপর যা হলো

রাজধানীতে চলাচলকারী ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছেন। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা ভিক্টর পরিবহনের ১০টি বাস আটকে রাখে। পরে বাসের মালিকপক্ষ দোষ স্বীকার করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বাসগুলো ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বাসগুলো আটকে দেন শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বর্ণনা অনুযায়ী, জবির ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী গুলিস্তান থেকে বাসে ওঠার পর চালক ও সহকারী তাকে উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্য করতে থাকেন এবং শারীরিকভাবে হেনস্তার চেষ্টা করেন। বাসের অন্যান্য যাত্রীদের বিষয়টি জানালেও কেউ এগিয়ে আসেননি। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে তার বন্ধুদেরকে জানালে তারা ভিক্টর ক্লাসিকের বাসগুলো আটকে রাখেন। তবে হেনস্তকারী বাস চালক ও তার সহকারীকে পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বন্ধু সিফাত সাকিব বলেন, “আমাদের ব্যাচের এক বন্ধুকে গুলিস্তান থেকে বাসে ওঠার সময় হেনস্তা করা হয়। আমরা ওই বাস ও বাসের হেলপারকে আর পাইনি। এজন্য আমরা ভিক্টর ক্লাসিকের ১০টি বাস আটকে রেখেছি।”

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা প্রায়ই শুনি আমাদের বোনেরা এমন হেনস্তার শিকার হয়। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমি যে হেনস্তার শিকার হয়েছি, তা যেন আর কোনো মেয়ের সঙ্গে না হয়।”

এদিকে, বাস থেকে নেমে ভুক্তভোগী ছাত্রী জবি নিরাপত্তা সেলে অভিযোগ করেন। পরে জবি নিরাপত্তা সেল শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিক্ষোভ করে এবং ভিক্টর ক্লাসিক মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনায় বসে। আলোচনায় শিক্ষার্থীদের করা দাবিগুলো আপত্তি ছাড়াই মালিকপক্ষ মেনে নেয়।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষার্থীদের হেনস্থা করার দায় ভিক্টর ক্লাসিক মালিক সমিতিকে নিতে হবে এবং অভিযুক্ত স্টাফদেরকে চাকরিচ্যুত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে; আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমস্ত ভাড়া মওকুফ করতে হবে এবং পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদেরকে যথোপযুক্ত মর্যাদা দিতে হবে; ভিক্টর ক্লাসিকের সব বাসের স্টাফদের নিয়মিত কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; নারী শিক্ষার্থী ও যাত্রীদেরকে যথাযথ মূল্যায়ন হচ্ছে কি না, তা লক্ষ্য রাখতে প্রতিটি বাসে অভিযোগ বক্স রাখতে হবে; জরুরি পুলিশ সহায়তার জন্য সরকারি ও মানবাধিকার সংস্থার হটলাইন নম্বর রাখতে হবে। 

ভিক্টর ক্লাসিক মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. আসলাম ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক মানিক শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়নে লিখিত প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা ঘটলে আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানান।

এ ব্যাপারে প্রক্টর তাজাম্মুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

গত বছর অক্টোবরে ভিক্টর ক্লাসিক বাসে জবির আরেক ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। সে সময়ও ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ১১টি বাস আটকে রেখেছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়