ঢাকা     বুধবার   ১৯ মার্চ ২০২৫ ||  চৈত্র ৬ ১৪৩১

বহিষ্কৃতদের তালিকায় নেই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সম্পাদক সৈকত

ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৬, ১৮ মার্চ ২০২৫   আপডেট: ২০:১৮, ১৮ মার্চ ২০২৫
বহিষ্কৃতদের তালিকায় নেই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ সম্পাদক সৈকত

বিক্ষোভরত ঢাবি শিক্ষার্থীরা এবং শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত (বামে)

গণঅভ্যুত্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সহিংসতায় জড়িত ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ তালিকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের নাম থাকলেও নেই এ শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের নাম। 

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে এর প্রতিবাদে উপাচার্যের কার্যালয়ে সামনে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

প্রকাশিত তালিকা থেকে জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতায় জড়িত ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বহিষ্কৃতদের তালিকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের নাম রয়েছে। তবে ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ অন্যান্য চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম বহিষ্কৃতদের তালিকায় নেই।

আরো পড়ুন:

জুলাই-আগস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত সহিংসতার ঘটনায় ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপণের নেতৃত্বে একটি সত্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা ঢাবির ১২২ জনের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।

সোমবার (১৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি এক সিন্ডিকেট সভায় এই তালিকা উপস্থাপন করা হয়। সত্য অনুসন্ধান কমিটির তালিকা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১২৮ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

তালিকায় সাদ্দাম হোসেন ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়। তারা সশরীরে হামলায় উপস্থিত ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এছাড়া তালিকায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল পর্যায়ের নেতাদের নাম রয়েছে। তালিকায় স্থান পেয়েছেন বহিরাগতরাও।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান চলাকালে ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক মারধরের শিকার হন। ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯৭ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নেন। অনেক শিক্ষার্থী রাতে হলে ফিরে মারধরের শিকার হন।

১৬ ও ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর আবারও হামলা করা হয়। ১৭ জুলাই বিকেল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এরপর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটে।

উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা সত্য অনুসন্ধান কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে। তাদের দাবি, বিভিন্ন হল ভিত্তিক চিহ্নিত হামলাকারীদের নাম নেই প্রতিবেদনে।

১২৮ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী যারা হামলায় জড়িত ছিল তাদের প্রথম তালিকাটি সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকায় দুইজন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং একজন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের অনুসারী এবং পটুয়াখালী জেলার ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী ছিলেন।

ঢাবি প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “এটা বহিষ্কারের তালিকা নয়। এটা সত্য অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দুইজনের নাম দিয়েছে, এ বিষয়ে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। পটুয়াখালীর যে ছিলেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ওখানকার প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়