আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে ঢাকা অবরোধের হুঁশিয়ারি
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে রাজধানী ঢাকা অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে জুলাই আন্দোলনে আহতদের সংগঠন ওয়ারিয়র্স অব জুলাই। এছাড়া আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
শনিবার (২২ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ঢাকা অবরোধের ঘোষণা দেন ওয়ারিয়র্স অব জুলাইয়ের নেতারা।
তারা বলেন, আমরা যে ত্যাগ স্বীকার করেছি, আমাদের সহযোদ্ধারা যে জীবন দিয়েছে, তা ভুলে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া হবে না। আহত শরীরের ক্ষত এখনো শুকায়নি, শহীদদের রক্তের দাগ এখনো মুছে যায়নি। তাই এ অন্যায় কখনোই মেনে নেওয়া যাবে না।
রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্কবার্তা দিয়ে তারা বলেন, সতর্ক হন, না হলে আরেকটি জুলাই আসবে। নিজেদের সংশোধন করুন, নইলে আওয়ামী লীগের পরিণতিই আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
তারা আরও বলেন, আমরা বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছি, হুমকিতে পিছু হটব না। খুনি হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। জুলাই আন্দোলন শুধু নির্বাচনের দাবিতে সীমাবদ্ধ ছিল না বরং বাকস্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, সাম্য ও মানবিক মর্যাদার জন্য এ লড়াই। স্বাধীনতার এত বছর পরেও যেসব অধিকার জনগণ পায়নি, তা আদায় করতেই আমাদের সংগ্রাম চলবে।
অন্যদিকে, বিকেল ৩টায় একই স্থানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের নিন্দা জানানো হয়।
ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে খুন করতে পারে, সেই আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসার জন্য ২ লাখের বেশি বিপ্লবী ভাই-বোনদের খুন করতে ন্যূনতম কুণ্ঠাবোধ করবে না। বিপ্লবী ছাত্র-জনতা এই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, প্রশাসন লীগের বিরুদ্ধে বুক চেতিয়ে দিয়ে রাজপথে লড়াই করেছিল, তারা এ বক্তব্য (উপদেষ্টার বক্তব্য) প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এর নিন্দা জানাচ্ছে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোন পরিকল্পনা নেই আপনার। তাহলে কিসের পরিকল্পনা আছে? এই রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে আপনারা সেখানে বসেছেন। দিল্লির নির্দেশে আগামীতে এ দেশে নির্বাচন হবে, সেজন্য কি আপনাদের এখানে বসানো হয়েছিল? বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ হাজার হাজার নেতাকর্মীদের হত্যা গুম-খুন করে গেছে, তারপরেও কীভাবে আপনারা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছেন?
তিনি আরো বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছে, বাংলাদেশের বিজয় নাকি ইন্ডিয়ার বিজয়। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী থেকে শুরু করে এর তৃণমূল পর্যায়ের কোনো নেতাকর্মীকে দেখেছেন এর প্রতিবাদ করতে; দেখেননি। তারা প্রতিবাদ করেনি। তার মানে তারা কোনো বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল নয়। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে ধারণ করে না। সুতরাং এই বাংলার মাটিতে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।”
একটা গোষ্টি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানুষকে উস্কে দিচ্ছে অভিযোগ করে বিন ইয়ামিন বলেন, “কারো পোস্টকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে উস্কে দেওয়া হলে আমরা সেটাকে সমর্থন করতে পারি না। বাংলাদেশের ক্রান্তিলগ্নে যেভাবে সেনাবাহিনী দেশ ও জনগণের পক্ষে ছিল, বর্তমান সময় ও ভবিষ্যতেও আমরা বিপ্লবী সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনার জনগণের পক্ষে থাকবেন। গণহত্যাকারীদরে পক্ষ আপনারা নিবেন না। রাজনীতি কারা করবে, নির্বাচন কারা করবে, নির্বাচন কবে হবে এগুলো ঠিক করার দায়িত্ব ক্যান্টনমেন্টের নয়।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী