ঢাকা     বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ১ ১৪৩১

 ভারী বর্ষণে নোয়াখালীর পানিবন্দি ও বানভাসিরা আতঙ্কে

নোয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
 ভারী বর্ষণে নোয়াখালীর পানিবন্দি ও বানভাসিরা আতঙ্কে

বঙ্গোপসাগরে নিন্মচাপ সৃষ্টি হওয়ায় নোয়াখালীতে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বর্ষণ। এতে করে আবারও জেলাতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে পানি কমতে থাকলেও ভারী বর্ষণের কারণে আবারও বাড়তে শুরু করেছে পানি। এতে নতুন করে পানিবন্দি ও বানভাসিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। 

এদিকে বন্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আবারও আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন মানুষ।

জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, টানা ভারী বর্ষণের কারণে অনেক নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক বাসাবাড়ির আঙিনায় পানি উঠে গেছে। এতে করে আবারও বিড়ম্বনায় পড়েছেন মানুষ। বসতঘরের সামনে পানি ওঠায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাওয়ার প্রস্ততি নিচ্ছেন।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, নোয়াখালীর ৮ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের প্রায় ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০০ মানুষ এখনো পানিবন্দি হয়ে আছেন। ৩৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫ হাজার মানুষ এখনো আছে।

সদর উপজেলার কাদরহানিফ ইউনিয়নের হেলাল বলেন, বৃষ্টির কারণে আবারও পানি বাড়ছে। মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সুবর্নচর উপজেলার সিরাজ মিয়া জানান, টানা বৃষ্টির কারণে আমনের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিছুদিন আগের বন্যায় আমরা কৃষকরা এমনিতে লোকাসানে পড়েছি। এখন আবার অতিরিক্ত পানি হলে সব আশা শেষ হয়ে যাবে। লোনের টাকা কিভাবে শোধ করবো ?

জেলা শহরের ভুলুয়া কলোনির আহসান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বাড়িতে এসেছি। ঘর গুছিয়ে বসবাসের উপযোগী করেছি। এখন বৃষ্টি হওয়ায় আবার দুশ্চিন্তায় আছি। ঘরে অসুস্থ বৃদ্ধ মা। আবার যদি ঘরে পানি উঠে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবো।

জলিল নামে একজন বলেন, গত কয়েকদির টানা রোদ থাকায় সড়কে পানি একদম ছিল না। একরাতের বৃষ্টিতে রাস্তা এবং বাসাবাড়িতে আবার পানি উঠেছে। মনে হচ্ছে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। বর্তমানে সমুদ্রে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে।

হাতিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় হাতিয়ার প্রায় ১০টি ট্রলার ডুবে গেছে। অনেক জেলে নিখোঁজ আছে। হাতিয়ার সাথে সব ধরনের নৌ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কেউ হাতিয়ায় আসতে পারছে না আবার যেতেও পারছে না।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে নোয়াখালী আবারও বন্যার কবলে পড়ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ রাখছি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে। বৃষ্টি না হলে বন্যা পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশা করছি।

সুজন/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়