ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘বিশ্বের প্রথম এইচএফসি ফেজ আউট’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ

অগাস্টিন সুজন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বিশ্বের প্রথম এইচএফসি ফেজ আউট’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ

পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ওয়ালটনের আয়োজনে বিশ্ব ওজোন দিবসের বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পৃথিবীর প্রাণ ও পরিবেশের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ওজোন স্তর। ওজোন স্তরের ক্ষয়রোধ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে পরিবেশবান্ধব এবং বিদ্যুৎসাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার জরুরি।

বিশ্ব ওজোন দিবসের আলোচনায় বক্তারা জানিয়েছেন, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় বাংলাদেশে ‘বিশ্বের প্রথম এইচএফসি ফেজ আউট’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ওয়ালটন।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘মন্ট্রিল প্রটোকল, ওজোন স্তর সুরক্ষার ৩২ বছর’ শীর্ষক ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা ওয়ালটনের এ উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহমেদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম।

ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিমের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এস এম মঞ্জুরুল হান্নান খান, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) ড. নুরুল কাদির, বিএসটিআইর মহাপরিচালক মুয়াজ্জেম হোসাইন এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ওয়েন থি গোক ভ্যান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল আলম, ওয়ালটন গ্রুপের পরিচালক রাইসা সিগমা হিমাসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার বলেন, ওয়ালটনই একমাত্র কোম্পানি যারা ইলেকট্রনিক্স পণ্য দিয়ে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে ওয়ালটন সব সময় প্রথমেই ছিল, প্রথমে আছে এবং প্রথমেই থাকবে। ওয়ালটন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো কাঁচামাল ব্যবহার করে না। তারা ওজোন স্তর সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এবং সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরীকে সম্মাননা স্মারক প্রদান

 

তিনি জানান, ওজোন স্তর সুরক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর পাঁচটি প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। যার মধ্যে তিনটি প্রকল্পই ওয়ালটনের।

আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী বলেন, ওজোন স্তর হচ্ছে পৃথিবীর ফিল্টার। কিন্তু ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও গ্যাসের ব্যবহারে তা ধ্বংস হচ্ছে। ওজোন স্তর রক্ষার জন্য ১৯৮৭ সালে কানাডার মন্ট্রিলে স্বাক্ষরিত হয় বিশ্ব চুক্তি। মন্ট্রিল প্রোটোকল খ্যাত ওই চুক্তিতে অনুস্বাক্ষরিত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। ওজোন স্তর রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর, ইউএনডিপি এবং ওয়ালটনের যৌথ উদ্যোগ সারা বিশ্বেই প্রশংসিত হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২৩০ মেট্রিক টনেরও বেশি এইচএফসি ব্যবহার রোধ হচ্ছে, যা প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সমপরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের সমান।

তিনি জানান, বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশে তৈরি পরিবেশবান্ধব পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম এবং ৪১ সালের মধ্যে উন্নত আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে ওয়ালটন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ওয়েন থি গোক ভ্যান বলেন, বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটনের বিশ্বজুড়ে সুনাম রয়েছে। তারা পরিবেশের সুরক্ষার ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। মন্ট্রিল প্রোটোকল স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশের ওয়ালটনই ‘বিশ্বের প্রথম এইচএফসি ফেজ আউট’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যাতে ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তর সহায়তা দিচ্ছে। এ প্রকল্প সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের চমৎকার এক উদাহরণ, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আশরাফুল আলম বলেন, ওয়ালটন সবসময়ই পরিবেশ ও জীবের সুরক্ষার প্রতি যত্নবান। ওয়ালটন কারখানা স্থাপনের শুরুতেই বর্জ্য পরিশোধনের জন্য ইটিপি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। পণ্যের নকশা থেকে শুরু করে কাঁচামাল নির্বাচন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সক্ষমতা পরিবেশের জন্য উপযুক্ত সব বিষয়েই ব্যাপক গুরুত্ব দেয়া হয়। যার স্বীকৃতিস্বরূপ গত বছর ওয়ালটন জাতীয় পরিবেশ পদক লাভ করে।

ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে পরিবেশ ও জীবের সুরক্ষায় পণ্য উৎপাদন ও পুনর্ব্যবহারে ওয়ালটন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যাবে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ সুরক্ষায় অবদান রাখায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এবং সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরীকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯/অগাস্টিন সুজন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়