ভারত থেকে ৬০ হাজার টন জ্বালানি তেল আমদানি হবে
ভারত থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারী লিমিটেড (এনআরএল) থেকে পার্বতীপুর ডিপোতে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে ডিজেল আসবে। এজন্য ব্যয় হবে ৩১৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। জ্বালনি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বিপিসি প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান থেকে মেয়াদী চুক্তির আওতায জি-টু-জি ভিত্তিতে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে। ২০২০ সালের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গত বছর ১৩ নভেম্বর অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারী লিমিটেডের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে ইন্দোবাংলা ফ্রেন্ডশীপ পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপোতে ডিজেল আমদানির বিষয়ে গত ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল তারিখে বিপিসি ও এনআরএল-এর মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পাইপ লাইন স্থাপন/নির্মাণ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পাইপ লাইন স্থাপন/নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত প্রিমিয়ামে (মার্কিন ডলার ৫ দশমিক ৫০/ব্যারেল) রেল ওয়াগনের মাধ্যমে পার্বতীপুর ডিপোতে ২০১৬ সাল থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। এনআরএল থেকে পার্বতীপুরে ডিজেল গ্রহণ করার ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ের মধ্যে ডিজেল প্রাপ্তি ও পরিবহন খরচ সাশ্রয় হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়াগন স্বল্পতার কারণে প্রধান স্থাপনা চট্টগ্রাম/দৌলতপুর ডিপো থেকে পার্বতীপুর ডিপো অঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী ডিজেল সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। ফলে এনআরএল থেকে আমদনিকৃত ডিজেল দিয়ে পার্বতীপুর ডিপো অঞ্চলের চাহিদাপূরণসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ডিজেল সরবরাহ নিশ্চিত করা সহজ হচ্ছে।
সূত্র জানায়, আগের ধারাবাহিকতায় এনআরএল প্রতিনিধিদলকে ২০২০ পঞ্জিকাবর্ষের জন্য ডিজেলের আমদানির পরিমাণ নেগোশিয়েশনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এনআরএল প্রতিনিধিদল গত বছর ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত নেগোশিয়েশন বৈঠকে অংশ নেয়। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন অনুযায়ী ২০২০ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ে ৬০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হয়। এর মধ্যে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য ৩০ হাজার মেট্রিক টন এবং জুলাই-ডিসেম্বর সময় পর্যন্ত বাকি ৩০ হাজার মেট্রিক জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
সূত্র জানায়, গত বছর ২৩ ডিসেম্বরের সোনালী ব্যাংকের প্রতি মার্কিন ডলারের রেট ৮৪ দশমিক ৯৫ টাকা হিসেবে প্রতি ব্যারেলের (গ্যাস অয়েল ১ মেট্রিক টন=৭ দশমিক ৪৬ ব্যারেল) প্রিমিয়াম হবে ৫ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। রেফারেন্স প্রাইস ৭৬ দশমিক ৭৬ মার্কিন ডলার। সে হিসেবে প্রিমিয়াম বাবদ পরিশোধ করতে হবে ২০ কোটি ৯১ লাখ টাকা। নিরুপত মূল্য ২৯১ কোটি ৮৭ রাখ টাকা এবং ইন্সুরেন্স বাবদ এক কোটি ৫২ লাখ টাকাসহ মোট ৩১৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। তবে আমদানিয় জ্বালানি তেলের প্রকৃত দাম হবে বিল অব ল্যান্ডিং তারিখে প্রকাশিত প্ল্যাটস-কে ভিত্তি ধরে দুইদিন আগে এবং দুই দিন পরে (২+১+২) অর্থাৎ ৫দিনের গড় হিসেবে জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার দাম অনুযায়ী।
উল্লেখ্য, বিল অব ল্যান্ডিং তারিখে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম ও ডলারের বিপরীতে টাকার দাম মানের হ্রাস/বৃদ্ধির কারণে আর্থিক সংশ্লেষ কম/বেশি হতে পারে।
এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকা/হাসনাত/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন