অগ্নি নিরাপত্তায় আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো ওয়ালটন, যুক্ত হলো আধুনিক ফায়ার ট্রাক
অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র সদরদপ্তরে যুক্ত হলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ফায়ার ট্রাক (টিটিএল)। ফলে ওয়ালটন সদরদপ্তরে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশপাশের জনপদ, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও কারখানাগুলোতেও অগ্নি নির্বাপণে আগের চেয়ে আরও দ্রুত ও কার্যকরী সহযোগিতা প্রদান করা যাবে। ওয়ালটনের মতো বাংলাদেশের খুব কম প্রতিষ্ঠানই কর্মীদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে ফায়ার ট্রাক (টিটিএল) ব্যবহার করছে।
ওয়ালটন সদরদপ্তরের এনভায়রনমেন্ট, হেলথ অ্যান্ড সেফটি (ইএইচএস) বিভাগের ফায়ার সেইফটি ম্যানেজমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে এই ফায়ার ট্রাকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
অগ্নি নিরাপত্তায় ফায়ার ট্রাক যুক্ত প্রসঙ্গে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র চেয়ারম্যান এস এম নূরুল আলম রিজভী বলেন, ‘ওয়ালটন ব্যবস্থাপনা পর্ষদ বিশ্বাস করেন- শ্রমিক বাঁচলে, কোম্পানি বাঁচবে। আর কোম্পানি বাঁচলেই দেশ। আমরা আশা করি, এই ফায়ার ট্রাক ব্যবহারের মাধ্যমে কারখানার অগ্নি নিরাপত্তা আরও উন্নত হবে’।
ওয়ালটনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মো. ইউসুফ আলী বলেন, ট্রিপিং রেসকিউ বাস্কেট এবং লিফটিং সিস্টেমসহ ৩২ মিটার হাইড্রোলিক মই সেট, ৫০০০ লিটার পানির ট্যাঙ্ক, ৩০০ লিটার ফোম ট্যাঙ্কসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্র সমৃদ্ধ এই ট্রাক অগ্নিনির্বাপণ এবং প্রযুক্তিগত উদ্ধারের জন্য সরঞ্জামও বহন করতে পারবে। এটি সাধারণত সাইরেন এবং জরুরি যানবাহনের আলো, পাশাপাশি যোগাযোগের সরঞ্জাম যেমন দ্বিমুখী রেডিও এবং মোবাইল কম্পিউটার প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত রয়েছে। তাই এই ট্রাক নিয়ে যে কোনও অগ্নি দুর্যোগে দ্রুত উপস্থিত হয়ে মোকাবিলা করতে সক্ষম হওয়া যাবে।
সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. নিজাম উদ্দীন মজুমদার বলেন, অগ্নিনির্বাপক যানবাহনে ইনস্টল করা সরঞ্জামগুলোও অনেক উপায়ে সাহায্য করতে পারে। ফায়ার যানের সিঁড়ি শুধুমাত্র উদ্ধারের জন্য নয়, অন্যান্য কাজেও উচ্চতর স্থানে পৌঁছানোর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। ফায়ার ট্রাকের পানির পাইপ শুধুমাত্র আগুন নিভানোর জন্যই ব্যবহার করা যায় না বরং বিভিন্ন জায়গায় পানি পরিবহন ও সরবরাহ করা যায়। যার ফলে কারখানার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকায় ও কারখানায় বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সেবা দেওয়া যাবে। ফায়ার ট্রাকগুলো বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আগুনের পরিবর্তে অন্যান্য ঘটনা মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে। দাঙ্গা-হাঙ্গামা মোকাবিলায়ও ফায়ার ট্রাক ব্যবহার করা যেতে পারে।
সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. ইয়াছির আল-ইমরান বলেন, আধুনিক ডিজাইনের এই যানবাহন বা ফায়ার ইঞ্জিন দুর্ঘটনার কাছাকাছি বা কারখানায় থাকার কারণে প্রথম প্রতিক্রিয়াশীল অগ্নিনির্বাপক এবং শ্রমিকদের জরুরি অবস্থায় পরিবহন করতে পারবে। এটি অগ্নিনির্বাপকদের সময় বাঁচাবে এবং তাদের দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে সাহায্য করবে। এটি বিভিন্ন ধরনের উচ্চ-মানের সুরক্ষা সরঞ্জাম দিয়েও সজ্জিত রয়েছে। ন্যাশনাল ফায়ার প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের মান অনুযায়ী এখানে সকল ধরনের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. আনোয়ার সুমন বলেন, ফায়ার ট্রাকের গুরুত্ব শুধু জীবন বাঁচানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি একাধিক উদ্দেশ্যে কাজ করে যেমন: আগুন থেকে মানুষ, প্রাণী, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং অন্যান্য সম্পত্তি রক্ষা ও উদ্ধার করা। আগুন ব্যাপক স্তরে ছড়িয়ে পড়া থেকে প্রতিরোধ করা, বাণিজ্যিক স্থান এবং রাসায়নিক শিল্পে অগ্নি নির্বাপণ ইত্যাদি। তাই ওয়ালটনের এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়।
ইএইচএস বিভাগের প্রধান মো. সাদেকুর রহমান জানান, যে কোনও নিরাপত্তার বিষয়েই ওয়ালটন ইএইচএস বিভাগ বদ্ধ পরিকর। ফায়ার সেইফটি ম্যানেজমেন্ট সেকশনের এই ফায়ার ইঞ্জিন বা ট্রাকের (টিটিএল) ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপত্তায় আরও একটি নতুন মাত্রা যুক্ত হলো। উন্নত প্রযুক্তি সমৃদ্ধ Mercedes-Benz মডেলের এই ট্রাকের ব্যবহারের ফলে অগ্নি দুর্ঘটনাসহ অন্যান্য সকল প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দুর্ঘটনা মোকাবিলা করতে আমরা সক্ষম হবো। পাশাপাশি কারখানার আশপাশের জনজীবনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে আশা করি।
ফায়ার সেইফটি ম্যানেজমেন্ট সেকশন ইনচার্জ মো. ইশাদুল ইসলাম সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত দক্ষ চালকের মাধ্যমে নিয়মিত এই ফায়ার ট্রাক (টিটিএল) মহড়া দেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে এর বিবিধ ব্যবহার সম্পর্কে ব্যবহারিক ধারনা দেন।
আকরাম/এনএইচ