বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের যাত্রা শুরু
প্রেস বিজ্ঞপ্তি || রাইজিংবিডি.কম
শিক্ষাখাতে সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বুধবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী ক্যাম্পাস ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান এবং পরিচালক ইয়াশা সোবহান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ সফলতা কামনা করা হয়।
পরে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষসহ সার্বিক বিষয়াদি পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানের শেষে হলরুমে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।
বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমি মনে করি, একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সফলতা নির্ভর করে চারটি স্টেকহোল্ডারের ওপর। এর মধ্যে প্রথম স্টেকহোল্ডার হচ্ছে ম্যানেজমেন্ট, দ্বিতীয় শিক্ষক ও স্টাফরা, তৃতীয় শিক্ষার্থীরা এবং চতুর্থ অভিভাবকরা। সবগুলো একত্রে কাজ করলেই একজন শিক্ষার্থী সফল হয়ে উঠবে। আমি এই প্রতিষ্ঠানের সবার সফলতা কামনা করি।
এটি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এন ব্লকে ১০ বিঘা জমির ওপর সাততলা বিশিষ্ট স্থায়ী ক্যাম্পাসে অবস্থিত। জাতীয় শিক্ষাক্রমের বাংলা ও ইংলিশ ভার্সনে স্কুলে নার্সারি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকার্যক্রম চালু হয়েছে। স্কুলটির কারিকুলাম এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাবে।
এতে তারা আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে এবং ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্য দক্ষ হয়ে উঠবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যাধুনিক ও নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। ভবনের দুই পাশ এবং মাঝখান মিলিয়ে রয়েছে তিনটি করিডর। চারপাশে খোলা বারান্দা এবং লিফটের সুবিধাসহ শ্রেণিকক্ষগুলোতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রয়েছে, যা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল এবং শিক্ষাদানে সহায়তা করবে।
সরেজমিন স্কুল ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, সুপ্রশস্ত গোলাকার সিঁড়ি উঠে গেছে উচ্চতার শিখর স্পর্শ করতে। স্কুলটিকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে মনে হয় এক বিশ্বজগৎ। অঙ্কনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বাবা-মায়ের হাত ধরে প্রথম স্কুলে আসা ছোট্ট শিশুটির দুরন্ত শৈশব, উচ্ছলতায় ভরা কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্যের উদ্দীপনায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়ার গল্প। এখানে হাত বাড়ালেই শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অন্বেষণ করে আলোকিত মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারবে।
স্কুলে প্রবেশ করার জন্য শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ কার্ড ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা বাস সার্ভিস, ক্যাফেটেরিয়া এমনকি টিউশন ফি পর্যন্ত দিতে পারবে। কার্ড ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের স্কুল প্রাঙ্গণ ত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাশলেস লেনদেনে ভূমিকা রাখবে এ ডিজিটাল আইডি কার্ড।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সখ্য গড়ে তুলতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ইন্টারেকটিভ লার্নিং প্ল্যাটফরম, অনলাইন রিসোর্স এবং ডেটাবেজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্বব্যাপী তথ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারবে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিসর বিস্তৃত হবে এবং তারা আরো বেশি দক্ষ হতে পারবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি শ্রেণিকক্ষের আয়তন ১ হাজার বর্গফুটের মতো। শ্রেণিকক্ষগুলো দুই সারিতে তৈরি করা হয়েছে। এখানে প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ বিশেষভাবে তৈরি করা, যা শিক্ষার্থীদের নিত্যনতুন বিষয় নিয়ে গভীরভাবে শেখার সুযোগ করে দেবে।
প্রতিটি শ্রেণির চারটি শাখাকে ভিন্ন ভিন্ন রং নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ রং বিভিন্ন মূল্যবোধের প্রতীক, যা শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে প্রতিফলন ঘটাবে। যেমন নীল রং দিয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষা, সবুজ রং দিয়ে শান্তি, হলুদ রং দিয়ে আত্মবিশ্বাস, কমলা রং দিয়ে সংকল্প বোঝানো হয়েছে।
স্কুলের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। শ্রেণিকক্ষে স্মার্ট বোর্ড, প্রজেক্টর রয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা সহজেই আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, খেলাধুলা ও শারীরিক চর্চা শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশ এবং উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন খেলার সুযোগ রাখা হয়েছে। যেমন ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল, কাবাডি, সাঁতার ইত্যাদি। স্বনামধন্য প্রশিক্ষক দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে স্কুল মাঠের গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার জগতে নিজেদের মেলে ধরতে পারবে শিক্ষার্থীরা। শিশুদের প্রতিভা বিকাশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গৌরবান্বিত হবে বাংলাদেশ।
ঢাকা/এনএইচ