ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৮ ১৪৩১

কর-জিডিপি অনুপাত অপরিবর্তিত থাকছে বাজেটে

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৭ জুন ২০২০   আপডেট: ১৬:১২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০
কর-জিডিপি অনুপাত অপরিবর্তিত থাকছে বাজেটে

আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে কর-জিডিপি অনুপাতের লক্ষ্যমাত্রা অপরিবর্তিতই থাকছে।

করোনাভাইরাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে নতুন কোনো লক্ষ্যমাত্রা দিতে চাচ্ছে না সরকার। চলতি অর্থবছরের মতো ১৪ শতাংশ হিসাব করে চূড়ান্ত হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা।

চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের বাজেটে রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ১০ থেকে ১৪ শতাংশ উন্নতি করণের বিষয়টি বলা হয়েছিল।  যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই কর-জিডিপি অনুপাত অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

আরো পড়ুন:

রাজস্ব আদায়ের অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রণালয়ে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে মার্চ পর্যন্ত আদায় নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে এপ্রিল, মে ও জুন মাসের হিসাব যোগ করলে রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত নিয়ে প্রত্যাশা পূরণ করার আশা প্রকাশ করা হয় বলে এনবিআর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে জানিয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রাজস্ব-জিডিপি ছিল ১০.১০ শতাংশ।  যার মধ্যে ৮.৭৯ শতাংশ হচ্ছে এনবিআরের অংশ। আর চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আদায় ১ লাখ ৬৫ হাজার ৭৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।  প্রবৃদ্ধি হিসাবে যা ৭.৭৮ শতাংশ।  এপ্রিল, মে ও জুনের হিসাব যোগ করলে রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত আশানুরূপ বৃদ্ধি  পাবে বলে বৈঠকে প্রত্যাশা করা হয়।

যদিও বিশ্বের উদীয়মান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত নিয়ে অর্থনীতিবিদরা বরাবরই অসন্তোষ প্রকাশ করে থাকে।  ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত ছিল গড়ে ১০ দশমিক ২ শতাংশ।  যেখানে গত পাঁচ বছরের গড় কর-জিডিপি অনুপাত নেপালের ২৩ দশমিক ৩, ভারতের ২০ দশমিক ৩, পাকিস্তানের ১৫ দশমিক ২ এবং শ্রীলঙ্কার ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. এ. বি. মির্জা আজিজুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, বাংলাদেশে কর জিডিপি অনুপাত এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন। এমনকি পুরো বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্নে অবস্থান করছি। যেমন, নেপালের জাতীয় আয় আমাদের আয়ের দুই তৃতীয়াংশ। কিন্তু তাদেরও কর জিডিপি আমাদের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেশি। এখানে মূল বিষয় হচ্ছে করের জাল সম্প্রসারণ করা।  প্রশাসনিক অদক্ষতাসহ নানা কারণে তাদের করের আওতায় বৃদ্ধি পাচ্ছে না।

এদিকে আসন্ন প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরে মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। বাকি রাজস্ব আসবে এনবিআর বহির্ভূত রাজস্ব খাত থেকে।

এনবিআরকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করতে হবে ভ্যাটে। এই খাতে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা আদায় করার লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আয়করে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা এবং শুল্ক খাতে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকার লক্ষ্য থাকছে।

যদিও চলতি ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের প্রথম ১০ মাসে এরই মধ্যে ৬২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি।  বছর শেষে যা ৮০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলে স্বয়ং রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

 

রহমান/এসএম

রাইজিংবিডি.কম

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়