বাস্তবতার সঙ্গে বাজেটের মিল নেই : সিপিডি
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
বাস্তবতার সঙ্গে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের মিল নেই বলে মন্তব্য করেছে সেন্ট্রার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
বৃহস্পতিবার (৩ মে) বাজেট পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি কথা জানান।
সিপিডি নির্বাহী পরিচালক বলেন, করোনাকালে অর্থনীতি বিপর্যন্ত। এ সময় যে বড় আকারের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ শতাংশ ধরা হয়েছে। কিন্তু সেই প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিমাণ বিনিয়োগ দরকার, তা কীভাবে আসবে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। তাছাড়া ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ কয়েক বছর ধরে আটকে আছে। তাহলে কীভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়বে? ফলে বাস্তবের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটের মিল নেই।
পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিগত অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা পূরণ করা হয়নি। এবারও বাজেটে যে পরিমাণ রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, তা অর্জন সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থেকে গেছে। কর-জিডিপির অনুপাতও বাড়েনি। সরকারি ব্যয় আশানুরূপ হয়নি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রতিবছরই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হয়। এবার তা আরও কম হয়েছে। শিল্পোৎপাদনও কম। ছোট ছোট শিল্পের উৎপাদন কমেছে। অন্যদিকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য খুব একটা সহায়ক হবে না।
সিপিডির এই কর্মকর্তা বলেন, সামাজিক নিরাপত্তাসহ বেশ কিছু খাতে বরাদ্দ বাড়েনি। এরমধ্যে স্বাস্থ্য খাত অন্যতম। করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতে যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়ার দরকার ছিল, তা করা হয়নি। এখাতে বরাদ্দ জিডিপির ১ শতাংশের মধ্যে আছে। এই বরাদ্দ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের চাহিদা মিটবে না। অন্যদিকে বরাদ্দ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যখাত পিছিয়ে আছে। ফলে এখাতে ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। যার ফলে অনেক মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যের কাতারে নেমে এসেছে। অনেক মানুষের আয় কমেছে। অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, সরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে না। অথচ বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে না।
পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধির যে বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, সেই চাহিদা পূরণ করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। ফলে সামষ্টিক অর্থনীতির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
বাজেটে আয়মুক্ত সীমা বাড়ানো হয়নি। তা বাড়ানো হলে ভালো হতো কিন্তু তা করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা/এনএফ/বকুল