লকডাউনে শ্রমিক উপস্থিতি ভালো, দাবি শিল্প মালিকদের
জুনায়েদ শিশির || রাইজিংবিডি.কম
ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। শর্ত সাপেক্ষে উৎপাদনমুখী শিল্প কল-কারখানা খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার।
জানা গেছে, প্রথম দিনের লকডাউনে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের উপস্থিতি অন্যান্য সাধারণ দিনের মতোই ভালো। তবে যাতায়ত সমস্যায় পড়েছেন, শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারিরা, খাত সংশ্লিষ্টরা এই তথ্য জানান।
সমস্যা সমাধানে ভোর ৬ থেকে ৮টা এবং বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিবহন চালানোর অনুমতি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার রাস্তাগুলোতে সাধারণ যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। সকালে শ্রমিকদের অনেকে পায়ে হেটে কর্মস্থলে গেছেন। একই চিত্র ঢাকার পাশ্ববর্তী ও চট্টগ্রামসহ বিভাগিয় শহরগুলোর শিল্পাঞ্চলে। রাইজিংবিডির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, আইন প্রযোগকারী সংস্থার কঠোর অবস্থানের মধ্যে দিয়ে শিল্প-কারখানার কার্যক্রম চলছে।
এই প্রসঙ্গে বিজিএমইএ নেতা শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, কঠোর লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎপাদনমুখী কারখানা খোলা রাখার সুযোগ দেয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিধি-নিষেধের মধ্যে অনেকে ৪ থেকে ৫ কিলো মিটার দুর থেকে পায়ে হেটে অফিস করছে। আবার অফিস শেষে একইভাবে বাসায় ফিরবে। এটি প্রতিদিনের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। দুই একদিন হলে সমস্যা ছিল না।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি- বিধি-নিষেধ চলাকালে নিজস্ব ব্যবস্থায় কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের যাতায়ত ব্যবস্থা চালু রাখার জন্য। অনেক ক্ষেত্রে কারখানায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সবার জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রয়োজনে ভোর ৬টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তৈরি পোশাক খাতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা চালুর আবেদন জানিয়েছেন শহিদুল্লাহ আজিম। তিনি জানান, বর্তমানে এই পদ্ধতি চট্টগ্রামের কারখানাগুলোতে চালু রয়েছে।
বিকেএমইএ সহ সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, অন্য দিনের তুলনায় কারখানায় শ্রমিকের উপস্থিতি বেশি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাধারণ সময়ে শ্রমিকরা কারখানায় না এসে অবসর সময় কাটায় বা বেড়াতে বের হয়। কিন্তু লকডাউন হওয়ায় বেশিরভাগ শ্রমিক কারখানায় চলে এসেছে। কারণ- আজ তাদের ঘোরাঘুরি করার সুযোগ নাই। প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
যাতায়ত সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উপস্থিতি বেশি হলেও অনেকে পায়ে হেটে কষ্ট করে কারখানায় এসেছেন। যারা কারখানার পার্শ্ববর্তী এলাকায় থাকেন, তাদের সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু যারা দুরে থাকেন তাদের জন্য লকডাউনের কারণে পায়ে হেঁটে আসা কঠিন। এই সমাধানে তিনি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শ্রমিক এবং কর্মকর্তাদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা চালুর আহ্বান জানান।
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, কারখানার কাছাকাছি যেসব শ্রমিক থাকছেন, তাদের জন্য সমস্যা হয়নি। বাস বন্ধ থাকায় দুরের শ্রমিকদের জন্য সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তা সত্ত্বেও শ্রমিকরা কষ্ট করে কারখানায় এসেছেন। আর যারা আসতে পারেননি, আমাদের দাবি হচ্ছে- তাদের যেন বেতন কাটা না হয়। প্রয়োজনে তাদের জন্য পরিবহনের ব্যস্থা করা হোক।
ঢাকা/শিশির/এমএম