৬ প্রতিবন্ধীর জীবন বদলে দিলেন ওয়ালটনের এমডি
ওয়ালটনে নিয়োগ পাওয়া ৬ শারীরিক প্রতিবন্ধীর সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ
মানবিকতার আরেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো ওয়ালটন। প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োগ পেলেন ৬ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী। ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গোলাম মুর্শেদ নিয়েছেন সর্বোত্তম বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বেটার বাংলাদেশ টুমরো’। ওই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ওয়ালটনে ৬ জন সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তি নিয়োগ পেলেন। পর্যায়ক্রমে এরকম আরও অনেককে প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করবে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১ নভেম্বর, ২০২১) রাজধানীর বসুন্ধরায় করপোরেট অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই ৬ ব্যক্তি ওয়ালটনে যোগ দেন। ‘পিপল ম্যাটার মোর : ফিনান্সিয়াল এমানসিপেশন ফর এভরিওয়ান’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের ওয়ালটনে বরণ করে নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ তাদেরকে ওয়ালটন পরিবারে স্বাগত জানান।
ওয়ালটনে নিয়োগ পাওয়া ওই ৬ শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেন সাবিনা খাতুন, সবিতা রাণী দাশ, সুসান দে, অরবিন্দু চাকমা, লুৎফর রহমান এবং আবু বকর সিদ্দিক। তারা ওয়ালটনের করপোরেট অফিস, সার্ভিস সেন্টারসহ বিভিন্ন বিভাগে কাজ করবেন। সাভারের সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান সিআরপির মাধ্যমে ওয়ালটন তাদের নিয়োগ দেয়।
১ নভেম্বর ৬ জন শারীরিক প্রতিবন্ধীকে নিয়োগ দেয় ওয়ালটন। অনুষ্ঠানে কথা বলছেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ
ওই ৬ ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে গোলাম মুর্শেদ বলেন, আপনারা নিজেদেরকে দুর্বল ভাববেন না। আপনাদের মধ্যে অনেক প্রতিভা, সম্ভাবনা আছে। আমাদের সৌভাগ্য যে আপনাদেরকে ওয়ালটন পরিবারে পেয়েছি। আপনারা ৬ জন ওয়ালটনের ৩০ হাজার সদস্যের সঙ্গে যুক্ত হলেন। আমরা যে স্বপ্ন দেখছি, আপনারা তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে বাস্তবায়ন করবেন। দেশ-বিশ্ব পরিবর্তন হবেই। এটা আমাদের দ্বারাই সম্ভব। আজকে ৬ জনকে দিয়ে ওয়ালটন শুরু করলো। এরপর ৬০০ জন হবে। পরে ৬ হাজার জন হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করার জন্য সিআরপিকে ধন্যবাদ।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পরিবর্তন আসবেই। যদি উদ্দেশ্য ভালো থাকে, ভালো কিছু করতে চাইলে বাধা আসবে। কিন্তু সেজন্য পিছিয়ে গেলে চলবে না। বাধা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ সবক্ষেত্রেই ভালো করছে। যার অন্যতম উদাহরণ ওয়ালটন। বাংলাদেশের উন্নয়ন যদি কেউ দেখতে চায়, তবে তার শোকেস ওয়ালটন।
গোলাম মুর্শেদ বলেন, আমাদের সবার জন্ম নেওয়ার স্বার্থকতা পূরণ করতে হবে। আমরা কোনো না কোনো দায়িত্ব নিয়ে এই পৃথিবীতে এসেছি। আমাদের বুদ্ধি আছে, বিবেক, মূল্যবোধ আছে। সেই বিচার-বুদ্ধি ব্যবহার করে মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রেখে সবসময় ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো। কাজ করতে গেলে ভুল হবে। ভুল থেকে আমরা শিখবো। আমরা একে অন্যকে ভুলগুলো ধরিয়ে দেবো। ভুলগুলো সুন্দর ও সাবলিলভাবে শুধরে নেবো।
ওয়ালটনের মতো মাল্টিন্যাশাল প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পেয়ে ভীষণ আপ্লুত ওই ৬ শারীরিক প্রতিবন্ধী। তারা প্রতিষ্ঠান ও দেশের প্রতি সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তাদের মধ্যে লুৎফর রহমান বলেন, ওয়ালটন পরিবারে সম্পৃক্ত হতে পেরে খুবই আনন্দিত। ওয়ালটন আজ আমাদের যে সম্মান দেখালো, তাতে আমরা অভিভূত।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার ও ইভা রিজওয়ানা নিলু, ওয়ালটন প্লাজার সিইও মোহাম্মদ রায়হান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, এমদাদুল করিম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোজাহিদুল ইসলাম, তানভীর আঞ্জুম, চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রমুখ।
অগাস্টিন সুজন/এসবি