হাই-টেক শিল্পে বিশেষ অবদান: ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার’ পেলো ওয়ালটন
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ
দেশের শিল্প খাতে বিশেষ অবদান রাখায় ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৯’ পেয়েছে ওয়ালটন। হাই-টেক শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর, ২০২১) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
বেসরকারি খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পঞ্চমবারের মতো রাষ্ট্রপতির নামে প্রবর্তিত এ পুরস্কার দিলো শিল্প মন্ত্রণালয়। পুরস্কার হিসেবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একটি করে ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। এ বছর ছয়টি ক্যাটাগরিতে ওয়ালটনসহ ১৯টি প্রতিষ্ঠান ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার’ পেয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। সভাপতিত্ব করেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গোলাম মুর্শেদ।
‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৯’ হাতে ওয়ালটনের এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শনের আলোকে বর্তমানে বাংলাদেশে শিল্পায়ন এগিয়ে যাচ্ছে। বেসরকারি খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করতে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ উদ্যোগ জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের ধারাকে আরও সুসংহত করবে। সামগ্রিক জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সরকার উদার শিল্পনীতি গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের নিয়ে শিল্প, কৃষিসহ সব খাতে সমন্বিতভাবে দেশকে সার্বিক কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করব।’
তিনি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করতে পরিবেশের সুরক্ষার বিষয়ে বেসরকারি শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের যত্নবান হতে বলেন। পাশাপাশি শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দেওয়ার আহ্বান জানান।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক দুরবস্থার মাঝেও বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে শিল্প খাতে ব্যাপক গুণগত পরিবর্তনের ধারা সূচিত হয়েছে। শিল্প উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। মোট দেশজ উৎপাদন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি আয়ে শিল্প খাতের অবদান বেড়েই চলছে।’
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি খাত যাতে উন্নত বাংলাদেশ গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, সেজন্য তাদের উৎসাহিত করতে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে।’
পুরস্কার দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিল্প মন্ত্রণালয়সহ সরকারকে ধন্যবাদ জানান গোলাম মুর্শেদ। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার সফল বাস্তবায়ন করছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২ বছর ধরে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখছি। দেশের উন্নয়নের অন্যতম উদাহরণ ওয়ালটন। যেখানে ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ইলেকট্রনিক্স খাতে আমদানির্ভর দেশ থেকে বাংলাদেশ উৎপাদন এবং রপ্তানিমুখী দেশে পরিণত হয়েছে। চলতি বছর ওয়ালটন ১৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ইলেকট্রনিক্স খাতে ১ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য নিয়েছে ওয়ালটন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।’
পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এসডিজির নবম লক্ষ্য হলো—শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো। বাংলাদেশের বেসরকারি শিল্প খাতের উদ্যোক্তাগণ এ খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তারা বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি এবং ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী যে লক্ষ্য নিয়েছেন, বরাবরের মতো সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকলে বেসরকারি খাত তা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’ সর্বোপরি সরকার এবং দেশের সব পর্যায়ের ক্রেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
অগাস্টিন সুজন/রফিক