ঢাকা     রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৯ ১৪৩১

পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজেটে কোনও নির্দেশনা নেই: ডিবিএম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫০, ২৭ জুন ২০২২  
পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজেটে কোনও নির্দেশনা নেই: ডিবিএম

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চরম অবস্থায়। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের আশা, মূল্যস্ফীতি গড়ে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে স্থির থাকবে। অথচ প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে কোনও নির্দেশনা নেই।

সোমবার (২৭ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাজেট পর্যালোচনা জন প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির খতিয়ান শীর্ষক সভায় এসব কথা বলেন গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের (ডিবিএম) সহ সভাপতি আমানুর রহমান। 

সেফটি অ্যান্ড রাইটস অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মস্তোফা, যুগ্ম সম্পাদক সেকান্দার আলী, জিটিভির নিউজ এডিটর রাজু আহমেদ, এসএ টিভির বিজনেস এডিটর সালাউদ্দিন বাবলু, সেফটি অ্যান্ড রাইটসের প্রজেক্ট কো অর্ডিনেটর দিলরুবা বেগম মোনালিসা উপস্থিত ছিলেন।

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের জন্য কিছু প্রস্তাবনাও দেয় গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন। লিখিত প্রস্তাবনায় আমানুর রহমান বলেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে টিসিবির সরবরাহ সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। তেলসহ সংবেদনশীল পণ্য আমদানিতে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করা। কৃষি বিপণন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করা। এজন্য বাজেট বৃদ্ধি করা।

দরিদ্রসহ প্রায় দেড় কোটি পরিবারের মূল্যস্ফীতি, কোভিড, দুর্যোগ, আর্থিক বৈষম্য মোকাবিলার জন্য প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল তৈরি করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে নামমাত্র অর্থ ও খাদ্য সহায়তার বদলে এর পরিমাণ বাজার মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা দরকার।

জীবনের ঝুঁকি থেকে সামাজিক সুরক্ষা সম্পর্কে প্রস্তাবনা বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ সকল ভাতা মাসিক দ্বিগুণ করা হোক। সার্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা প্রচলন। প্রচলিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির দুর্বলতা ও ত্রুটি দূর করতে হলে টার্গেট গ্রুপভিত্তিক ছোট ছোট অসংখ্য কর্মসূচির বদলে মানবাধিকার ও জনকল্যাণের দৃষ্টিভঙ্গিতে সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষার প্রচলন করা। বন্যা মোকাবিলায় ও জীবন জীবিকার সহায়তায় অবিলম্বে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।

প্রস্তাবনায় পেনশন সম্পর্কে বলা হয়েছে, অনানুষ্ঠানিক খাতে থাকা হতদরিদ্র শ্রমজীবী, কৃষক, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মূলত করের অর্থে কন্ট্রিবিউশন নিশ্চিত করতে হবে। স্ব-কর্মসংস্থানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য নমনীয় কিন্তু স্পষ্ট কাঠামো তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে ডিমান্ড সাইডে সচেতনতা ক্যাম্পেইন তৈরি করা দরকার। পেনশনের চাঁদার পরিমাণ ও বয়সকালে পর্যাপ্ত পেনশনের পরিমাণ বিষয়ে মানুষের চাহিদা ও প্রত্যাশার সমন্বয় ঘটানো দরকার। অতিসত্বর জনসাধারণের উপযোগী (সহজবোধ্য ভাষায়) ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম আইন’ প্রণয়ন করা দরকার।

করভার ও বৈষম্য হ্রাস করারও প্রস্তাব করেছে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন। এরমধ্যে করমুক্ত আয়সীমা ন্যূনতম ৪ লাখ টাকা করতে হবে। প্রতি স্ল্যাবে অন্তত আড়াই শতাংশ হারে করভার কমানো প্রয়োজন। বিপরীত দিকে করপোরেট ক্ষেত্রে বিদ্যমান করহার কমানো উচিত নয়। সেই সঙ্গে অতিধনীদের ওপর সম্পদ করের সারচার্জ বাড়াতে হবে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের টার্নওভারের কর কমানো দরকার বলে জানিয়েছেন গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন।

আমানুর রহমান বলেন, কৃষিপণ্য উৎপাদনের ১০ বছরের যে কর অবকাশ রয়েছে তা ভালো। একই সঙ্গে কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনে নতুন বিনিয়োগে ১০ বছরের করমুক্তি সুবিধা দেওয়া উচিত। কৃষকদের জন্য শস্য ইন্স্যুরেন্স কভারেজ নিশ্চিত করতে হবে।

সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার প্রবর্তনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের দাবি জানান গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন।

শ্রমিকদের জন্য রেশন ও হেলথ কার্ড প্রচলন করা দরকার। জেলা পর্যায়ে ও শ্রমঘন এলাকায় শ্রমিক কলোনি ও বিশেষায়িত হাসপাতাল করতে হবে। তাছাড়া জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নবায়ন করতে হবে বলে জানান গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন।

ঢাকা/এনএফ/এনএইচ  


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়