ঋণ পরিশোধে বিশেষ সময় চান ব্যবসায়ীরা
ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করেও আগামী ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত খেলাপি থেকে মুক্ত থাকতে চান ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, আগামী রমজানে পণ্য সরবরাহ বাড়াতে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে রিজার্ভ থেকে জরুরি ভিত্তিতে ডলার সহায়তা চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠকে এসব দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বৈঠক শেষে এফবিসিসিআই’র সভাপতি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ঋণ পরিশোধে সময় ও পণ্য আমদানির এলসি খুলতে ডলার সহায়তা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, রোজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়াও আরও অনেক পণ্য প্রয়োজন হয়। এজন্য আমদানিটা সহজ করার জন্য আলাপ করেছি। প্রয়োজনে রিজার্ভ থেকে এলসি খোলার জন্য সহায়তা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।
মো. জসিম উদ্দিন আরও বলেন, জ্বালানি ও গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এসব কারণে ফ্যাক্টরি চালানো যাচ্ছে না। এলসি না খোলার কারণে কাঁচামাল আমদানি করা যাচ্ছে না। এজন্য ব্যবসার ওপর প্রভাব পড়েছে। ব্যবসা করতে না পারলে কিস্তি দেওয়া যাবে না। তাই, ঋণ পরিশোধের সুবিধাটি আগামী বছরের জুন পর্যন্ত দেওয়া হোক, যাতে কেউ খেলাপি না হয়। গ্রাহক খেলাপি হলে ব্যাংকও খেলাপি হয়ে যাবে। তাই, এটা বৃদ্ধি করা যৌক্তিক মনে করছি।
তিনি বলেন, আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে ডলারের দামে পার্থক্য আছে। এক রেট করার জন্য বলেছি। কারণ, যে কাঁচামাল আমদানি করার জন্য একজন ব্যবসায়ীর খরচ ১০৫ টাক পড়ে। কিন্তু সে রপ্তানি করতে গেলে সেটা ১০১ টাকা। এক্ষেত্রে একটা পাথর্ক্য থেকে যায়। তাই, এটা এক রেট করার দাবি জানানো হয়। এছাড়া, ইডিএফ ফান্ডের ঋণের সুবিধা চাওয়া হয়েছে। ইডিএফ ঋণের মেয়াদ ১৮০ দিন থেকে বাড়িয়ে ২৭০ দিন করার দাবি জানানো হয়েছে।
কোভিডের চেয়ে খারাপ অবস্থা বর্তমান বাংলাদেশের, এ দাবি করে তিনি বলেন, তাই, আমরা এসব সুবিধা চেয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের আশ্বস্ত করেছে, তারা সবগুলো বিষয় পর্যালোচনা করবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ঋণ শ্রেণিকরণ সুবিধার মেয়াদ বৃদ্ধি করা না হলে অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনিচ্ছাকৃত খেলাপিতে পরিণত হবে। এতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এ কারণে ঋণ বিরূপ মানে শ্রেণিকরণ প্রক্রিয়া আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়কে ইতিবাচকভাবে দেখবে বলে জানিয়েছে।
সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এফবিসিসিআই পলিসিগত সুবিধা চেয়েছে। আমরা এফবিসিসিআইয়ের বিষয়গুলো বিবেচনা করে দেখব। তবে, এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানানো যাচ্ছে না।
এনএফ/রফিক