ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১১ ১৪৩১

ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জানাতে ৩ কোম্পানিকে বিএসইসিতে তলব

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ১৯ ডিসেম্বর ২০২২  
ব্যবসায়িক পরিকল্পনা জানাতে ৩ কোম্পানিকে বিএসইসিতে তলব

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তিনটি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক পরিকল্পনার অগ্রগতি বিষয়ে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিগুলো হলো— ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার ও লুব-রেফ (বাংলাদেশ)। আগামী মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) তাদের বিএসইসির অফিসে বৈঠকের জন্য তলব করা হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে কোম্পানি তিনটির প্রসপেক্টাসে উল্লেখ করা ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে অলোচনা করা হবে। এজন্য কোম্পানিগুলোকে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

সম্প্রতি বিবিধ খাতে তালিকাভুক্ত ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার ও লুব-রেফের (বাংলাদেশ) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে বৈঠকের বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

একই সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ইস্যু ম্যানেজার এএফসি ক্যাপিটাল ও ইবিএল ইনভেস্টমেন্ট, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের ইস্যু ম্যানেজার লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট ও লুব-রেফের ইস্যু ম্যানেজার এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।

কোম্পানি তিনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো পৃথক পৃথক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে। তাই, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে উল্লিখিত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চায় কমিশন। এজন্য কমিশনের ক্যাপিটাল ইস্যু বিভাগের সঙ্গে একটি বৈঠক করা প্রয়োজন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২০ ডিসেম্বর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্য, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) এবং কোম্পানি সচিবকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সঙ্গে আনার নির্দেশ দেওয়া হলো।

কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০২১ সালে। ‘ওয়াই’ ক্যাটাগরির এ ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ৪৭ কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার ৪ কোটি ৭২ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৯টি। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে ৫৭.৭৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৯.৭৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২২.৪৫ শতাংশ শেয়ার আছে। ডিএসইতে ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সর্বশেষ ১০৩.৬০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। পরবর্তী সময়ে কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৮২ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৯টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। কোম্পানিটির শেয়ারের কাট-অব প্রাইস নির্ধারণের জন্য ওই বছরের ১ নভেম্বর বিকেল ৫টা থেকে ৪ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিলাম হয়। গত ১০ সেপ্টেম্বর বিএসইসির ৭৩৯তম সভায় কোম্পানির বিডিংয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। কোম্পানিটি প্রসপেক্টাসে জানায়, পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি ভবন নির্মাণ, নতুন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনা এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ খাতে ব্যয় করবে।

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০২১ সালে। ‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ১৭২ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার ১৭ কোটি ২৯ লাখ ৯৫ হাজার ৪৮৮টি। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে ৩৮.১৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৬.৯৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫৪.৯০ শতাংশ শেয়ার আছে। ডিএসইতে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের শেয়ার শেয়ার সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সর্বশেষ ২৯.৩০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের আইপিও অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। পরবর্তী সময়ে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ২২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এর আগে কোম্পানিটির কাট-অব প্রাইস নির্ধারণে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিডিং (নিলাম) হয়। বিডিংয়ে কোম্পানিটির কাট-অব প্রাইস নির্ধারণ করা হয় ৩২ টাকা। কোম্পানিটি প্রসপেক্টাসে জানায়, পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে সাবসিডিয়ারি কর্ণফুলী পাওয়ার ও বারাকা শিকলবাহা পাওয়ারে বিনিয়োগ, দীর্ঘমেয়াদি ঋণের আংশিক পরিশোধ এবং আইপিওজনিত ব্যয়ে ব্যবহার করা হবে।

লুব-রেফ (বাংলাদেশ) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০২১ সালে। ‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২৫০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ১৪৫ কোটি ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার ১৪ কোটি ৫২ লাখ ৪৩ হাজার ১৪৪টি। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে ৩৫.৭০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২২.৫৮ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ০.০৬ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪১.৬৬ শতাংশ শেয়ার আছে। ডিএসইতে লুব-রেফের শেয়ার শেয়ার সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সর্বশেষ ৩৭.১০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য লুব-রেফের আইপিও অনুমোদন দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। পরবর্তী সময়ে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে ৪ কোটি ৫২ লাখ ৪৩ হাজার ১৪৪টি শেয়ার ইস্যু করে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। বিডিংয়ে কোম্পানিটির কাট-অব প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। কোম্পানিটি প্রসপেক্টাসে জানায়, পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থ কোম্পানিটি ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও আইপিও প্রক্রিয়া খাতে ব্যবহার করা হবে।

এনটি/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়