ঢাকা     সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১০ ১৪৩১

সাত মাসে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৩, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   আপডেট: ০৯:২৪, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
সাত মাসে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ

দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সাত মাসে কৃষিঋণ বিতরণের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ বিতরণ করতে পেরেছে। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। এরমধ্যে সাত মাসে ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১৮ হাজার ৬৮৪ টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যংক এবং বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণে এগিয়ে রয়েছে। 

কৃষিঋণ বিতরণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।  

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা আর সাত মাসে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১৮ হাজার ৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১৮ হাজার ৬৮৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এরমধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ৭ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১১ হাজার ২০৬ কোটি টাকা।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, ৮টি বিদেশি ব্যাংক ও ৪০টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ মোট ৫৬টি ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণ করে। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও বিডিবিএল লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাংক আল ফালাহ, সিটি ব্যাংক এনএ, হাবিব ব্যাংক, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া লক্ষ্যপূরণ করতে পেরেছে।

কৃষিঋণ বিতরণের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। অর্থবছরের সাত মাসে ব্যাংকটি ৪ হাজার ২৭৩ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। কৃষকদের মাঝে ১ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। ১ হাজার ৩১৩ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করে সার্বিকভাবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের ২ শতাংশ কৃষিঋণ হিসেবে বিতরণ করে। এর বাইরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বিতরণ করা ঋণের পুরোটাই কৃষিঋণ হিসেবে।

সূত্র জানায়, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণী সংস্থার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ নিবন্ধিত এনজিওগুলো কৃষিঋণের বড় একটি অংশ বিতরণ করে। যেসব বাণিজ্যিক ব্যাংকের পল্লী অঞ্চলে ঋণ বিতরণে যথেষ্ট অবকঠামো নেই, সেসব ব্যাংক এনজিওর মাধ্যমে বিতরণ করে। এনজিওগুলো বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে থেকে ৮ থেকে ৯ শতাংশ সুদ হারে তহবিল সংগ্রহ করে তা গ্রাহকপর্যায়ে ২২ শতাংশ হারে বিতরণ করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা স্কিম, গাভি পালনে ঋণ, শস্যে ঋণসহ বিভিন্ন রকম কৃষিঋণ স্কিম রয়েছে। শস্য, সেচ, কৃষি যন্ত্রপাতি, লাইভস্টক ও পোল্ট্রি, মৎস্য চাষ, শস্য সংরক্ষণ ও বাজারজাত, পল্লী অঞ্চলে দারিদ্র্য দূরীকরণে ছোট উদ্যোগে এসব ব্যাংক ও এনজিও কৃষিঋণ বিতরণ করে। প্রতিবছর ব্যাংকিং খাতে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষিঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী যেসব ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্য ছাড়িয়েছে সেগুলো হলো- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও উত্তরা ব্যাংক। সাত মাসে বিদেশি উরি ব্যাংক কোনো কৃষিঋণ বিতরণ করেনি। ১০ শতাংশের নিচে ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকগুলো হলো মধুমতি ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়