ঢাকা     বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ২ ১৪৩১

ব্রোকারের মার্জিন ঋণ ও ডিলারের বিনিয়োগের তথ্য চায় ডিএসই

নুরুজ্জামান তানিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ১৬ জুলাই ২০২৩  
ব্রোকারের মার্জিন ঋণ ও ডিলারের বিনিয়োগের তথ্য চায় ডিএসই

পুঁজিবাজারের ব্রোকারেজ হাউজগুলোর স্টক-ব্রোকারদের মার্জিন ঋণ এবং স্টক-ডিলারের বিনিয়োগের তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এজন্য ব্রেকারেজ হাউসগুলোকে জুলাই মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত তথ্য নির্দিষ্ট নিয়ম বা ফরম্যাটে রেগুলেটরি রিপোর্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে এসব তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি সকল ট্রেকহোল্ডার বা ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

দেশের পুঁজিবাজারে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজ গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ করেছে এবং বন্ধ হয়েছে। এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) সকল ব্রোকারেজ হাউজ পরিদর্শন ও তদন্তের নির্দেশনা দেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই ধারাবাহিকতায় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর স্টক-ব্রোকারদের মার্জিন ঋণ ও স্টক-ডিলারের বিনিয়োগের তথ্য এবং সফটওয়্যারের ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করবে ডিএসই।

ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিএসইসি ও ২১ এপ্রিল ডিএসইর দেওয়া চিঠির বিষয়ে অবহিত করে স্টক-ব্রোকারদের মার্জিন ঋণ এবং স্টক-ডিলারদের বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে ব্রোকারেজ এবং ডিলারকে জুন মাসের মার্জিন ঋণ ও বিনিয়োগের তথ্য জুলাই মাসের মধ্যে ‘ট্রেক হোল্ডারদের জন্য তৈরি রেগুলেটরি রিপোর্টিং সফটওয়্যার’ এর মাধ্যমে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে যে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রেরণের ক্ষেত্রে কোনও হার্ড কপির প্রয়োজন নেই।

গত কয়েক বছরে তামহা সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ও বানকো সিকিউরিটিজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম এবং জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। এরপর ডিএসই ও সিএসই’র সকল ব্রোকারেজ হাউজ পরিদর্শন ও তদন্তের নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় তদন্ত সাপেক্ষে ১০৮টি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে বড় অঙ্কের ঘাটতি পাওয়া যায়। এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৮৫ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে দ্রুত ঘাটতি সমন্বয় করতে বলা হয়। এরপর থেকে ১০২টি প্রতিষ্ঠান ৫৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা সমন্বয় করেছে। বাকি ৬টি ব্রোকারেজ হাউজ ৪৯ কোটি ২৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা ঘাটতি এখনো সমন্বয় করেনি।

এর মধ্যে সিনহা সিকিউরিটিজের ঘাটতি আছে ৯ কোটি ৮২ লাখ ২৪ হাজার টাকা, ফারইস্ট স্টকস অ্যান্ড বন্ডের ঘাটতি আছে ১ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ৩৩ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ঘাটতি আছে পিএফআই সিকিউরিটিজের, এশিয়া সিকিউরিটিজের ৬২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া, লতিফ সিকিউরিটিজের ৩২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং মডার্ন সিকিউরিটিজের ৫ কোটি ২৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘাটতি আছে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, বিএসইসি গত বছর ২২ মার্চ সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে। এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে আছে—স্টক এক্সচেঞ্জকে লিমিটি সুবিধা স্থগিত করা হবে, যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসাবে আইপিও কোটা সুবিধা বাতিল হবে, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানার বিপরীতে পাওয়া লভ্যাংশ স্থগিত থাকবে এবং ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারীর নিবন্ধন এবং নতুন শাখা ও বুথ খোলা বন্ধ রাখা হবে। তার আগে ২১ মার্চ বিনিয়োগকারীদের আমানত অর্থাৎ শেয়ার ও অর্থ সরিয়ে নেওয়া তামহা সিকিউরিটিজ, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ও বানকো সিকিউরিটিজসহ ২৫টি ব্রোকারেজ হাউজের নিবন্ধন সনদ নবায়ন বন্ধসহ নানা সুযোগ-সুবিধা স্থগিত করা হয়।

ঢাকা/এনএইচ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়