ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৯ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২৫ ১৪৩১

পেনশন স্কিমের ১১ কোটি টাকা বন্ডে বিনিয়োগ

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ২২ অক্টোবর ২০২৩   আপডেট: ১৮:১৮, ২২ অক্টোবর ২০২৩
পেনশন স্কিমের ১১ কোটি টাকা বন্ডে বিনিয়োগ

সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীসহ অন্য কর্মকর্তারা

সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জমা পড়া চাঁদার টাকা বিনিয়োগ করেছে সরকার। প্রাথমিকভাবে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

রোববার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। 

অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কবিরুল ইজদানী খান, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম মোস্তফা এবং অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। 

পরে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সর্বজনীন পেনশন স্কিমের হালনাগাদ তথ্য উপস্থিত মিডিয়া প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বিনিয়োগকৃত বন্ডের একটি রেপ্লিকা অর্থমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।  

সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৫ হাজার জন চাঁদা দিয়েছেন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জমা পড়া চাঁদার টাকা বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে সরকার। প্রাথমিকভাবে ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।

গত ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনকল্যাণমূলক সর্বজনীন পেনশন স্কিমের শুভ উদ্বোধন করেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাস’, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিতদের জন্য ‘সুরক্ষা’ এবং স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য ‘সমতা’ স্কিমের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে পেনশনের জন্য অর্থ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রায় ১৫ হাজার ব্যক্তি রেজিস্ট্রেশন করে মাসিক অর্থ জমা দিয়েছেন। সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক এ কার্যক্রম খুব সহজ, স্বচ্ছ এবং নাগরিকবান্ধব।

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘সর্বজনীন পেনশন তহবিল’ শিরোনামের ব্যাংক হিসাবে পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী সবার চাঁদার অর্থ জমা থাকবে। এই অর্থ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নিরাপদ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের ট্রেজারি বন্ডকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্য লভ্যাংশের ভিত্তিতে পেনশনারের মাসিক এন্যুয়িটি হিসাব করে মাসিক পেনশন দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে, একজন ব্যক্তি কত টাকা কত সময় ধরে জমা দিয়েছেন, কী পরিমাণ পেনশন প্রাপ্য হবেন, তার একটি সম্ভাব্য হিসাব দেখানো হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন তহবিলে ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি জমা হয়েছে। আজ জমাকৃত অর্থ থেকে ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকার ১০ বছর মেয়াদী ট্রেজারি বন্ড কিনে বিনিয়োগের শুভ উদ্বোধন করা হলো। 

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের এ যাবত গৃহীত কার্যক্রম এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে মিডিয়াতে প্রচার করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

পেনশন স্কিম সম্পর্কে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। এর মাধ্যমে দেশের মানুষ, বিশেষ করে দুর্যোগ মুহূর্তে মানুষের বিশেষ সুবিধা দেবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, তাদের অবস্থা আমাদের চেয়েও খারাপ ছিল। মায়েরা তাদের চুল বিক্রি করে সন্তানদের শিক্ষার ব্যয় নির্বাহ করত। আমাদের অবস্থা তাদের চেয়ে খারাপ নয়। দেরিতে হলেও আমরা এই ব্যবস্থা চালু করতে পেরেছি। আশা করি, এর সুফল এ দেশের মানুষ পাবেন। এজন্য ব্যাপক প্রচারের প্রয়োজন। বিশেষ করে, যারা বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছেন, তাদের এই পেনশন স্কিমে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে মিডিয়াকে ভূমিকা পালন করতে হবে।

অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বলেন, আমরা আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। তারা কিছু শর্ত দিয়েছিল। তার বেশ কয়েকটি পরিপালন করা হয়েছে। বাকি দুয়েকটি বিষয় আছে। আশা করছি, সেগুলোও পরিপালন করা হবে। তাদেও দেওয়া শর্তগুলো আমাদের অর্থনীতির জন্যও ভালো।

হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়