ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাড়ছে

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩২, ১৩ নভেম্বর ২০২৩   আপডেট: ০৯:৩৪, ১৩ নভেম্বর ২০২৩
বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাড়ছে

ছবি: ইন্টারনেট

সরকারের বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ বেড়েই চলেছে। তিন মাসের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সুদাসলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ যেখানে ছিল মাত্র ১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। সেখানে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারে। যা প্রায় তিনগুণ।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ ও বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো মেগা প্রকল্পসহ কয়েকটি বড় ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ায় সার্বিকভাবে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে চাপ বেড়েছে।

আরো পড়ুন:

সূত্র জানায়, অর্থবছরের শুরুতে চলতি অর্থবছরে সুদাসলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ প্রায় ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে প্রাক্কলন করেছিল অর্থ বিভাগ।

ইআরডির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক ঋণের আসল পরিশোধ ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের আসল বাবদ ১৭৩ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল।

প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরে আসল পরিশোধ করতে হবে প্রায় ২৯০ কোটি ডলার এবং এর পরের অর্থবছরে এটি বেড়ে দাঁড়াবে ৩৩১ কোটি ডলার।

জানা গেছে, ২০২৭ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে নেওয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঋণের আসল পরিশোধ শুরু হবে। এছাড়া আরও কয়েকটি ঋণের গ্রেস পিরিয়ডও শেষ হতে থাকবে। তখন ঋণ পরিশোধের পরিমাণ আরও বাড়বে।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন প্রকল্পের ঋণ এবং বাজেট সহায়তার ঋণের জন্য ১১৯ কোটি ডলার সুদ পরিশোধ করতে হবে। আগামী ২০২৪-২০২৫ এবং ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে যথাক্রমে ১৩১ কোটি ডলার এবং ১৪১ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সমাপ্ত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ১৬ জুন পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের হিসাব ছিল ৯৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

উল্লেখ্য, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের জন্য অর্থছাড় কমেছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় ছিল এক হাজার কোটি ডলার, যা ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কমে ৯২৬ কোটি ডলার দাঁড়িয়েছে।

সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়া ঋণগুলোর টেকসই হওয়াটা নির্ভর করছে বাংলাদেশের এই বৃহৎ পরিসরের প্রকল্পগুলোর সুফল আদায় এবং স্থানীয় উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর সক্ষমতার ওপর। উদাহরণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার পর যদি বাংলাদেশ জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে না পারে, তাহলে এই ঋণ পরিশোধের বোঝা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাবে। একইভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের সাফল্যও নির্ভর করছে টানেলের আশপাশ এলাকায় প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো স্থাপন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার সক্ষমতার ওপর। একইসঙ্গে অন্যান্য মেগা প্রকল্পের অর্থনৈতিক সাফল্যের ওপর নির্ভর করবে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা।

/হাসনাত/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়