১৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করবে বিপিসি
ছবি: ইন্টারনেট
আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে পাঁচ ক্যাটাগরির মোট ১৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন’ (বিপিসি)। আগামী ২০২৪ সালের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য এ জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। প্রিমিয়ামসহ জ্বালানি তেল আমদানিতে ব্যয় হবে প্রায় ১৩,৬০০ কোটি টাকা।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ ক্যাটাগরির পরিশোধিত জ্বালানি তেলের মধ্যে- ১০ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন (৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ব্যারেল) গ্যাস অয়েল (ডিজেল), ২ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল, ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন (১২ লাখ ব্যারেল) জেড এ-১ (অ্যাভিয়েশন ফুয়েল), ৭৫ হাজার মেট্রিক টন (৬ লাখ ৪৫ হাজার ব্যারেল) মোগ্যাস (অকটেন) ও ১৫ হাজার মেট্রিক টন মেরিন ফুয়েল রয়েছে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, একটি একক ক্রয় প্রস্তাবের পাঁচটি প্যাকেজের (এ,বি,সি,ডি,ই) আওতায় সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠান এ জ্বালানি তেল সরবরাহ করবে। দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ডিজেল ও মেরিন ফুয়েল কেনা হবে ‘ইউনিপেক সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড’ থেকে এবং ফার্নেস অয়েল, জেড এ-১ (অ্যাভিয়েশন ফুয়েল) ও মোগ্যাস (অকটেন) কেনা হবে ‘ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড’ থেকে। প্রিমিয়ামসহ এতে মোট ব্যয় হবে ১২২ কোটি ৫২ লাখ ৬ হাজার ১১০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা (১ ডলার=১১১ টাকা হিসাবে)। এর মধ্যে শুধু জ্বালানি তেলের মূল্য হচ্ছে ১২ হাজার ৪২৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং অবশিষ্ট ১৩ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা হচ্ছে প্রিমিয়াম।
উল্লেখ্য, প্রিমিয়ামের মধ্যে সাধারণত জাহাজ ভাড়া, ইন্স্যুরেন্স, বাঙ্কার মূল্য, এলসি কনফার্মেশন চার্জ, লাইটারেজ খরচ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিপিসির নিজস্ব বাজেট বরাদ্দ, জ্বালানি তেল বিক্রয় বাবদ প্রাপ্ত অর্থ এবং প্রয়োজনে অন্য উৎস থেকে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে এ জ্বালানি তেল কেনা হবে। একইভাবে আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শুল্ক ও ভ্যাট নিজস্ব তহবিল থেকে যথা সময়ে সরকারকে পরিশোধ করবে বিপিসি।
সূত্র জানায়, জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী, প্রতি ব্যারেল গ্যাস অয়েল (ডিজেল)-এর রেফারেন্স মূল্য ধরা হয়েছে ১০২.১১ ডলার ও প্রিমিয়াম ৯.১৮ ডলার। প্রতি ব্যারেল জেড এ-১ (এভিয়েশন ফুয়েল)-এর রেফারেন্স মূল্য ধরা হয়েছে ১০২.৭৯ ডলার ও প্রিমিয়াম ১০.৮৮ ডলার। প্রতি ব্যারেল মোগ্যাস (অকটেন)-এর রেফারেন্স মূল্য ধরা হয়েছে ৯৩. ৫৯ ডলার ও প্রিমিয়াম ১০.৩৮ ডলার; প্রতি মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েলের রেফারেন্স মূল্য ধরা হয়েছে ৪৬০.২৪ ডলার ও প্রিমিয়াম ৪৫.৫৪ ডলার এবং প্রতি মেট্রিক টন মেরিন ফুয়েলের রেফারেন্স মূল্য ধরা হয়েছে ৬৩৭.৫০ ডলার ও প্রিমিয়াম ৭৮ ডলার।
জানা গেছে, একমাত্র মেরিন ফুয়েল ছাড়া অন্য চারটি জ্বালানি তেলের প্রিমিয়াম দর প্রস্তাব প্রাক্কলিত দরের তুলনায় কম।
অন্যদিকে, জ্বালানি তেলের প্রকৃত দর নির্ধারণ করা হবে বিল অব ল্যাডিং তারিখে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক দরকে (প্ল্যাটস-এ প্রকাশিত) ভিত্তি ধরে এর ২দিন আগে, জাহাজীকরণের দিন এবং এর পরের ২দিন অর্থাৎ মোট ৫দিনের গড় মূল্য হিসাবে।
সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে পাঁচ ক্যাটাগরির মোট ১৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে চলতি বছরের গত ৭ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। দশটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র কেনে এবং এর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। পাঁচ প্যাকেজের প্রতিটিতেই চারটি করে দরপত্র জমা দেওয়া হয়। পরে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশে ‘ইউনিপেক সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড’ ফার্নেস অয়েল, জেড এ-১ (অ্যাভিয়েশন ফুয়েল) ও মোগ্যাস (অকটেন) সরবরাহ করবে ‘ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড’।
/হাসনাত/এসবি/