ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও চীনের কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ১৭ জানুয়ারি ২০২৪   আপডেট: ২২:৩৫, ১৭ জানুয়ারি ২০২৪
এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও চীনের কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ

২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের পরেও পণ্য রপ্তানিতে ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে এ আহ্বান জানান তিনি।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাটজাত পণ্য আমদানির পাশাপাশি বাংলাদেশে পাট এবং চামড়া শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন।

প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখমুখি হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কৌশল নির্ধারণে কাজ করছে। বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী। এ চুক্তি হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বাড়বে।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, বাংলাদেশের পাট ও চামড়া খাত উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় খাত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুই খাতের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পাট ও চামড়া শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে ঈদুল আজহার দিন ১ কোটির বেশি পশুর চামড়া ছাড়াও সারা বছর প্রচুর পশুর চামড়া সংগৃহিত হয়। যথেষ্ট লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় এগুলো দ্রুত প্রসেসিং করা সম্ভব হয় না। ফলে, সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। 

চামড়া খাতকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার চামড়াজাত শিল্পের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে, উল্লেখ করে তিনি চামড়া শিল্পের উন্নয়নে চীন সরকারকে বাংলাদেশে লজিস্টিক সাপোর্টসহ এ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, পাট ও পাটজাত পণ্য উৎপাদনে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতি করে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে পাটজাত পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের ‘বর্ষ পণ্য’ ঘোষণা করা হয়। পাট ঐতিহ্যগতভাবেই দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। পাট থেকে তৈরি সব পণ পরিবেশবান্ধব ও ব্যবহার উপযোগী।

তিনি বলেন, চীনে বাংলাদেশি আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা ছাড়াও মানসম্মত তাজা খাবার, চিংড়ি, কাঁকড়া এবং মাছের চাহিদা থাকায় এসব পণ্য আরও বেশি রপ্তানি করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যান্য কৃষিপণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস আমদানিরও আহ্বান জানানো হয়েছে।

আহসানুল ইসলাম জানান, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। এর ফলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সব দেশ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা সফল।

চীনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ থেকে আম আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। পাট শিল্পের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ থেকে পাটপণ্য আমদানি এবং এ খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

হাসনাত/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়