ব্যাংক খাতে সুশাসন-জবাবদিহিতার হরণ ঘটেছে: ফাহমিদা খাতুন
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, দেশের আর্থিক খাত ব্যাংকনির্ভর। দেশের উন্নয়নে এ খাতের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। অথচ ব্যাংক খাতে সুশাসন-জবাবদিহিতার হরণ ঘটেছে, ভঙ্গুরতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে আমানতকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। ঋণ অনুমোদন, পুনঃতপশিল, অবলোপন সবই নিজেদের মতো করে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বাইরের চাপে কিংবা নিজেরা ইচ্ছা করে স্বাধীনভাবে কাজ করছে না। এ অবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে ব্যাংক খাতের ওপর সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
সংলাপে অংশগ্রহণ করেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ব্যাংকার মোহাম্মদ নূরুল আমিন, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।
মূল প্রবন্ধে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ২০২২ সাল শেষে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ দেখানো হয়েছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এর সঙ্গে অর্থঋণ আদালতের মামলায় আটকে থাকা এক লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা যোগ করলে খারাপ ঋণ আরও বেশি।
তিনি বলেন, উন্নত দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে রিয়েল টাইমে তথ্য দেওয়া হয়। অথচ আমাদের এখানে সেটা নিশ্চিত না করে উল্টো তথ্য সংগ্রহের দরজা বন্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ মানে শক্তভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সকালে এক রকম নিয়ম করে, বিকেলে আবার আরেকজনের কথা শুনে তা পরিবর্তন করে। আইনে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন দেওয়া আছে। তা অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, এখন খেলাপি ঋণ মডেলে পরিণত হয়েছে। এত খারাপ অবস্থায় আগে কখনো যায়নি। এ অবস্থা অবশ্যই কঠোর হাতে দমন করতে হবে, সুশাসন আনতে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করতে হবে। এটা না হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যতই ক্যাশলেস সোসাইটি, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, ক্রলিং পেগ দিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি করতে চায়, সেটা কোনোভাবেই সম্ভব না।
তিনি আরও বলেন, শুধু সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, ডলারের দর বাড়িয়ে কিংবা সুদহার বাড়িয়ে প্রবৃদ্ধি হবে না। প্রবৃদ্ধির জন্য ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প, কৃষি খাতে ঋণ বাড়াতে হবে।
/এনএফ/এসবি/