ঢাকা     শনিবার   ২৯ জুন ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৫ ১৪৩১

এলডিসি গ্রাজুয়েশন কৌশল হতে হবে নবম পাঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৮, ৯ জুন ২০২৪   আপডেট: ২২:১৯, ৯ জুন ২০২৪
এলডিসি গ্রাজুয়েশন কৌশল হতে হবে নবম পাঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের প্রেক্ষাপটে প্রণীতব্য নীতি ও কৌশল দেশের আসন্ন নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়ানোর লক্ষ্যে মসৃণ উত্তরণ সংক্রান্ত কৌশলটিতে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত রূপান্তরের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

রোববার (৯ জুন) রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরস্থ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভাগ (ইউ এন ডেসা) কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত টেকনিক্যাল লেভেল ওয়ার্কশ অন স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্যাটেজি (এসটিএস) শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা একথা বলেন।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। এ ছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গুয়েন লুইস উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব মো. শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০১৮ ও ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)-এর ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সব মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হয়েছে। ফলে, পাঁচ বছর প্রস্তুতিকাল শেষে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। জাতিসংঘের নিয়মানুসারে উত্তরণের প্রস্তুতকালীন সময়ে বাংলাদেশকে একটি স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি বা এসটিএস প্রণয়ন করতে হবে।

সম্প্রতি ইউএন ডেসার সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার উক্ত স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজির খসড়া প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেছে। এ অবস্থায় খসড়া প্রস্তুত করার অংশ হিসেবে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় মতামত বিনিময়ের লক্ষ্যে কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির ভাষণে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, সঠিক নীতি, পদ্ধতি, কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করতে পারবে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে এই দেশের কর্মঠ জনগণ, গতিশীল ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জনবান্ধব সরকার।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়ানোর লক্ষ্যে স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি শীর্ষক নীতি কৌশলটিতে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত রূপান্তরের ওপর জোর দেওয়া উচিত। স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি শীর্ষক কৌশলপত্রটি দেশের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।

ইআরডি সচিব মো. শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি শীর্ষক নীতি কৌশলটি দেশের নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলোকে সম্ভাবনায় পরিণত করতে সবার একযোগে কাজ রতে হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন বলেন, স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি শীর্ষক নীতি কৌশলটিতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি করা এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ থাকা প্রয়োজন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গুয়েন লুইস বলেন, জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা, জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত রূপান্তর ও পরিবেশগত মান সুনিশ্চিতকরণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব ও এসএসজিপি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এএইচএম জাহাঙ্গীর।

কার্যকর বাস্তবায়নের স্বার্থে এসটিএস-এ উল্লেখিত বিভিন্ন কৌশল আসন্ন নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যথাযথভাবে প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন মর্মে কর্মশালায় উপস্থিত বক্তাগণ অভিমত ব্যক্ত করেন। কর্মশালায় আসন্ন সময়ে প্রণীতব্য স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন এসটিএস সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক ড. এম এ রাজ্জাক। এ ছাড়া স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি সংশ্লিষ্ট কর্মপরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করে একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন এসটিএস সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক পরামর্শক কুয়োং মিন গুয়েন।

ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়