ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২৩ ১৪৩১

গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় দ্রুত আইন প্রণয়নের তাগিদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১০, ৮ অক্টোবর ২০২৪  
গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় দ্রুত আইন প্রণয়নের তাগিদ

গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের (গৃহকর্মী) সুরক্ষা দিতে বিগত সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করলেও তা সুরক্ষা দিতে পারছে না বলে মনে করছেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও মানবাধিকারকর্মীরা। তারা দ্রুত গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন পাসের তাগিদ দিয়েছেন। একইসঙ্গে গৃহকর্মকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি) আয়োজিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ সুপারিশ করেন তারা। 

ঢাকা শহরে গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরতে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাজধানীতে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের প্রায় ৫০ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। এর মধ্যে শারীরিক আঘাতের শিকার ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ, মারধরের শিকার ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ, বকাঝকার শিকার ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং যৌন নির্যাতনের শিকার ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া, ৩১ দশমিক ৪৫ শতাংশ গৃহকর্মী অত্যধিক কাজের চাপে থাকে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এএসডি’র নির্বাহী কমিটির সভাপতি ড. আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. তরিকুল আলম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপ-পরিচালক ও শিশু অধিকার কমিটির সদস্য সচিব এম রবিউল ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (স্বাস্থ্য) ডা. বিশ্বজিত রায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মোছা. সালমা আক্তার, শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক এস এম এনামুল হক, এএসডি’র নির্বাহী পরিচালক এম এ করিম, স্ক্যানের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমুখ। গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন এএসডি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউ কে এম ফারহানা সুলতানা।

আলোচনায় অংশ নিয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম বলেন, গৃহকর্মী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। অনেক আগে থেকে শিশু শ্রমিক নির্যাতন চলে আসছে। এটা সত্য যে, আগের তুলনায় শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন অনেক কমেছে। আমরা চাই, এটা শতভাগ বন্ধ হোক। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যে ৪৩টি কাজ চিহ্নিত করা আছে, তার সঙ্গে গৃহকর্মকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এম রবিউল ইসলাম বলেন, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় মানবাধিকার কমিশন সব সময় সক্রিয় আছে। শিশু নির্যাতন বন্ধে সরকার কাজ করছে। নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের পাশাপাশি আইন প্রণয়নে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে আইনের খসড়া প্রণয়ন হয়েছে। দ্রুতই তা চূড়ান্ত হবে।

গবেষণা প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় আইন ও নীতিমালা সংশোধনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। গৃহকাজকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিদ্যমান নীতিমালা ও আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির করতে হবে। নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরো সক্রিয় হতে হবে। নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার শিশুদের স্বাস্থ্য ও আইনি সেবা প্রদান কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।

এএএম/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়