ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৭ ১৪৩১

বাজেট থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের পরিকল্পনা

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১২, ২৭ অক্টোবর ২০২৪  
বাজেট থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁটের পরিকল্পনা

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ৪ মাস না যেতেই বাজেট বরাদ্দ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অর্থবছরের বাজেটের আকার রয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। বছরের প্রায় ৪ মাসে যেতে না যেতে বাজেট বরাদ্দের ৭০ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ফলে চলতি অর্থবছরের জন্য সংশোধিত বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেট থেকে ৯ ভাগ কম। গত অর্থবছরে যা ছিল ৬ ভাগ। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে বাজেটের আকার ৭০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে আনার একটি প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এটি নিয়ে আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এরপর আগামী মাসে অর্থ উপদেষ্টার কাছে সংশোধিত বাজেটের একটি আকার উপস্থাপন করা হবে। আর ডিসেম্বর মাসে সংশোধিত বাজেটটি চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকারও প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে আনা হবে। চলতি অর্থবছরে এডিপির আকার নির্ধারিত রয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এটি কমিয়ে ২ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার যে বাজেট বাস্তবায়ন হাতে নেওয়া হয়েছে তা অনেকটা অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে বিবেচনা করা যায়। যেখানে সরকারের কাঙ্খিত আয় নেই, সেখানে কীভাবে এত বিশাল বাজেট বাস্তবায়ন করা যাবে। এটি বাস্তবায়ন করার জন্য বিশাল অঙ্কের ব্যাংক ঋণ নিতে হবে। যার টার্গেট বাজেটেই ধরা রয়েছে। চলতি অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু এই পরিমাণ ঋণ নিলে এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রায় ‘ডাবল ডিজিট’ ছুঁই ছুঁই মূল্যস্ফীতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা বলা যায় না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, চলতি বছর ব্যাংক ঋণ ৮৫ হাজার কোটি টাকায় সীমায় টেনে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ এটি না করতে পারলে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।

আরো পড়ুন:

সূত্র জানায়, বাজেট বাস্তবায়নের জন্য অধিক পরিমাণে ব্যাংক থেকে যেন ঋণ নিতে না হয় তার জন্যও বাজেটকে ছোট করা হচ্ছে। বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সরকারের আয় বাড়ানো যাচ্ছে না। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা কম হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা কম।

উল্লেখ্য, বিগত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে এর আকার কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। বাজেটের আকার হ্রাস পায়  মূল বাজেটের ৬ শতাংশ, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৪৭ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, একই অর্থবছরে মূল এডিপি ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। পরে তা কমিয়ে ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়। তবে গেল অর্থবছরে সরকারের আয় না থাকায় বিপুল অঙ্কের ব্যাংক ঋণ নিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যেমন-মূল বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের টার্গেট ছিল এক লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়।

/হাসনাত/সাইফ/

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়