বাংলাক্রাফটের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলো সম্মিলিত ফোরাম
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
সম্মিলিত ফোরামের সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারক সমিতির (বাংলাক্রাফট) নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ এনে সম্মিলিত ফোরাম নির্বাচন বর্জন করেছে।
বুধবার ((১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা করেন সম্মিলিত ফোরামের প্যানেল লিডার গোলাম আহসান।
তিনি বলেন, “১৯৭৯ সালে দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাক্রাফট প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুর দিনগুলোতে সংগঠনের অফিস পরিচালনার মতো কোনো জায়গা ছিল না। সহকর্মীদের বাড়িতে কার্যক্রম পরিচালনা করেই সংগঠনটি এগিয়ে চলছিল। সেই ছোট পরিসর থেকে আজ আমরা ৫০ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি এবং ৫০০ সদস্যের এক বৃহৎ পরিবারের অংশে পরিণত হয়েছি।
বাংলাক্রাফট ১৯৮৩-৮৪ সালে প্রথমবার পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন শুরু করে। ২০২০-২০২২ মেয়াদে সম্মিলিত ফোরাম পরিচালিত পর্ষদ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাক্রাফটের নিজস্ব অফিস ক্রয় (২,৮০০ বর্গফুট, মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা)। ৯৩ লক্ষ টাকার এফডিআর এবং ব্যাংকে ৬০ লক্ষ টাকার সঞ্চয়। এ ছাড়া বিডা, বিপিসি, ইপিবি, এসএমই ফেডারেশন, এফবিসিসিআই, জিইএস, ই-ক্যাব এসব সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সাথে কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করেছি। উদ্যোক্তাদের পণ্য বিপণনে অনলাইন মার্কেটপ্লেস (দারাজ, ঐক্য, আমাজন) ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথমবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং মাসিক বুলেটিন চালু করেছি। অন্যদিকে, ২০২২-২৪ মেয়াদে সমমনা পরিষদের পরিচালনায় বাংলাক্রাফট লুটপাট, বৈষম্য এবং অরাজকতার শিকার হয়েছে। এফডিআর ভাঙা ও অপব্যবহার করে ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি ক্রয়, যা সংগঠনের কাজে ব্যবহৃত হয়নি। বিধি বহির্ভূত অর্থ লুটপাট করেছে। ট্রেনিং ও মেলার নামে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা অপব্যবহার করেছে। সদস্যদের সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত করে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ফান্ডের অপব্যবহার করা হয়েছে। অবৈধ ভাবে প্রতি মিটিংয়ে ২০০০ টাকা করে সম্মানী ভাতা গ্রহণ, যা বাংলাক্রাফটের সংবিধানের পরিপন্থী।
এ ছাড়া বর্তমান সভাপতি এস. ইউ. হায়দার, পূর্বের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর, চট্টগ্রাম-৩ আসনে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণার নামে বাংলাক্রাফটের অর্থ ব্যবহার করেছেন। তার নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিপ্রায়ে নির্বাচন কমিশন গঠনেও একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এই অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকার করা এবং বাংলাক্রাফটের সুরক্ষা ও ঐতিহ্য রক্ষার জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “আমরা এই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং বাংলাক্রাফটের সুষ্ঠু নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা এই অনিয়মের নির্বাচনকে বর্জন করছি এবং বর্তমান সভাপতির সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।”
ঢাকা/এএএম/টিপু