ঢাকা     শুক্রবার   ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ১৯ ১৪৩১

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু কাল 

বিশেষ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪  
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু কাল 

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় যাত্রী পরিবহনে বিশেষ ছাড় দিতে ইপিবি ও উবারের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষর করা হয়েছে

আগামীকাল ১ জানুয়ারি (বুধবার) পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হচ্ছে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৫। সকাল ১০টায় এ মেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মাসব্যাপী এ মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (সাপ্তাহিক ছুটির দিন রাত ১০টা পর্যন্ত)।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খান।

বাণিজ্য উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় যাত্রী পরিবহনে বিশেষ ছাড় দিতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও অ্যাপসভিত্তিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান উবারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। পরে বাণিজ্য উপদেষ্টা ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় প্রবেশের ই-টিকেটিং অ্যাপস উদ্বোধন করেন। 

প্রতিবছরের মতো এ বছরও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের বাণিজ্য মেলায় প্রথমবারের মতো অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল/প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছে উবার সার্ভিস।

মেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানার্থে তৈরি করা হয়েছে জুলাই চত্বর ও ছত্রিশ চত্বর। তরুণ সমাজকে রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধ করতে তৈরি করা হয়েছে ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন।

মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর/পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এ বছর। বিদেশি উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে থাকছে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার, ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন। থাকছে প্রযুক্তি কর্নার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার এবং শিশু পার্ক।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, চতুর্থবারের মতো বাণিজ্য মেলা হতে যাচ্ছে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে। মেলার লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৩৬১টি প্যাভিলিয়ন/স্টল/রেস্টুরেন্ট দেশীয় উৎপাদক-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে শতভাগ স্বচ্ছতায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্সস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি সামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল, টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হবে।

বাংলাদেশ ছাড়াও সাতটি দেশের প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো—ভারত, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান।

এক্সিবিশন সেন্টারের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে জুলাই চত্বর, দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে কালচারাল সেন্টার, টেকনোলজি কর্নার, রিক্রিয়েশন কর্নার এবং সেন্টারের উত্তর-পূর্ব (৬ একর) পাশে শিশু পার্ক ও উত্তর-পশ্চিম পাশে ছত্রিশ চত্বর ও নামাজ ঘর স্থাপন করা হয়েছে।  

মেলা ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। মেলা প্রাঙ্গণের বাইরেও নিয়মিত টহল থাকবে। নিরাপত্তা অগ্রাধিকার বিবেচনায় মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান, প্রবেশ পথ, পার্কিং এরিয়া এবং সংশ্লিষ্ট সব এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

এবারের মেলায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে। এক্সিবিশন হলে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আলাদা টয়লেটের পাশাপাশি এক্সিবিশন হলের বাইরেও পর্যাপ্ত সংখ্যক টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মেলায় খাদ্য দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ গঠিত টিম প্রতিদিন ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে।

মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও পেশেন্ট কেয়ার এটেনডেন্ট উপস্থিত থেকে বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা ও চিকিৎসা পরামর্শ দেবেন।

মেলায় থাকবে পর্যাপ্ত কার পার্কিংয়ের সুবিধা। পাঁচ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধাসম্বলিত দ্বিতল কার পার্কিং বিল্ডিং ছাড়াও এক্সিবিশন হলের বাইরে ৬ একর জমিতে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

মেলার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য মেলায় স্থাপন করা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম ও দর্শনার্থীদের সব ধরনের তথ্য দেওয়ার জন্য একটি তথ্য কেন্দ্র। ব্যাংকিং সার্ভিসের জন্য মেলায় থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্যাংক বুথ। মা ও শিশুদের জন্য মেলায় থাকবে মা ও শিশু কেন্দ্র। দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার/বেঞ্চ, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়