দাম বেড়েছে চালের, কমেছে আলু পেঁয়াজ সবজির
নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
সরবরাহ কম ও বন্যায় ধানের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার অজুহাতে বাজারে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতি জাতের চালের দাম খুচরা পর্যায়ে গড়ে ৬ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। যার ফলে সাধারণ ক্রেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর নিউমার্কেট কারওয়ানবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম উর্ধ্বমুখী। তাদের অভিযোগ, পাইকারি ও মিল পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে খুচরা পর্যায়েও দাম বেড়েছে।
এখন বাজারে বিআরআই-২৮ জাতের চাল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকায়। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা, যা গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায়। নাজিরশাইল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৬ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৮ টাকায়। গুটি স্বর্ণা জাতের চাল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।
সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এক বছরের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে গড়ে বেড়েছে ১২ শতাংশ।
কমেছে আলু পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজির দাম :
রাজধানীর খুচরা পর্যায়ে বিভিন্ন কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, সিম ৩০ টাকা, মুলা ১৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস লাউ ৪০ টাকা, বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ২০ থেকে ৩০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি শশা ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেড়শ ৫০ টাকা, জালি কুমড়া ৩০ টাকা পিস এবং মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় কমছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি রসুন ২৩০ টাকা ও দেশি আদা ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের দামও কিছুটা কমেছে। এখন মাঝারি সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে থেকে ৩০০ টাকায়। বড় সাইজের চাষের পাঙাস কেজি ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া কেজি ২০০ টাকা, কৈ কেজি ১৮০ টাকা, শিং কেজি ৫০০ টাকা, পাবদা কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি কেজি ৫০০ টাকা এবং দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ডিমের দামও কমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস কেজি ১১০০ টাকা।
রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা রাজিব হোসেন রাইজিংবিডি বলেন, “চালের দাম বেড়েছে। এভাবে বাড়তে থাকা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য অনেক কষ্টের। সরকারের উচিত চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ তদারকি করা।”
রাজধানীর নিউমার্কেটের চাল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “মানভেদে ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। এখানে আমাদের কোন হাত নেই। কারণ আমরা পাইকারি দরে যে দামে কিনি তার থেকে সামান্য লাভ করে ছেড়ে দেই।”
তবে পাইকারদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, মিলাররা দামে বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঢাকা/রায়হান/টিপু