ঢাকা     বুধবার   ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৪ ১৪৩১

চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর কার কত মুনাফা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ৬ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২৩:০২, ৬ জানুয়ারি ২০২৫
চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর কার কত মুনাফা

ফাইল ছবি

ব্যাংকিং খাতের নানা অনিয়ম, তারল্য সংকট থাকলেও ২০২৪ সালে চতুর্থ প্রজম্মের অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। সুদহার বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

পরিচালন মুনাফা একটি ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে মুনাফা থাকে তাকেই বলা হয় পরিচালন মুনাফা। পরিচালন মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ এবং সরকারকে কর পরিশোধ করতে হয়। প্রভিশন ও কর-পরবর্তী মুনাফা হলো ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট মুনাফা।

ব্যাংকাররা জানান, তারল্য সংকটসহ নানা সমস্যা থাকলেও কমিশন আয়, ট্রেজারি ও ডলার ব্যবসা থেকেও ভালো মুনাফা করেছে ব্যাংকগুলো।

আরো পড়ুন:

চতুর্থ প্রজন্মের ৯টি ব্যাংকের মধ্যে ৬টি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে।  এর মধ্যে সবচেয়ে ৪১৯ পরিচালন মুনাফা করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। ২০২৩ সালে ব্যাংকের মুনাফা ছিল ৩৭৪ কোটি টাকা।

চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৩৮ কোটি টাকা করেছে মধুমতি ব্যাংক। গত বছর ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফায় ছিল।এছাড়া সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের  পরিচালন মুনাফা ২২৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ১৭৪ কোটি টাকা মুনাফা করা মিডল্যান্ড ব্যাংক ২০২৪ সালে পরিচালন মুনাফা করেছে ২১০ কোটি টাকা। এছাড়া  মেঘনা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ১৬৫ কোটি টাকা থেকে বেড়ে  ২০৫ কোটি টাকা এবং এনআরবি ব্যাংকের ১৪৩ কোটি টাকা থেকে পরিচালন মুনাফা বেড়ে ২০২৪ সাল দাঁড়িয়েছে ২০২ কোটি টাকা।

চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংক কয়েক বছর ধরেই লোকসানে রয়েছে। অন্যদিকে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ইউনিয়ন ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক সংঘবদ্ধ দুর্নীতির কারণে খাদের কিনারায় গেছে। ব্যাংক দুটির ক্ষতির পরিমাণ জানতে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিদর্শন শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “ব্যাংকের মুনাফা কত হয়েছে এটি এখনো বলার সময় আসেনি। তবে এনআরবিসি ব্যাংক চেষ্টা করেছে সর্বোত্তম সেবা দিয়ে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের। এজন্য আমাদের আমানত সংগ্রহ বেড়েছে। অন্যদিকে ঋণের আদায়ও বেড়েছে। নতুন বছরে আমাদের লক্ষ্য প্রান্তিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য অর্থায়ন নিশ্চিত করা।”

এদিকে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মুনাফায় বড় ধরনের উল্লম্ফন হয়েছে। ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এছাড়া পূবালী ব্যাংকের ২ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা,  সিটি ব্যাংকের ২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়ার ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংকের ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা, প্রাইম ব্যাংকের ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১ হাজার ১১০ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংকের ৯৭৫ কোটি টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৮৫০ কোটি টাকা, ওয়ান ব্যাংকের ৮৩০ কোটি টাকা ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৬৪৪ কোটি টাকা।

ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বলেন, “ঋণের সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা উঠে যাওয়ার পর তাদের নিট সুদ আয় বেড়েছে। পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ভালো ব্যাংকগুলোর মোট সুদ আয়ের ৬০-৭০ শতাংশ আসছে ঋণ খাত থেকে। আর ২০ শতাংশের মতো সরকারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ থেকে এবং বাকিটা অন্য ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট থেকে আসে।”

ঢাকা/এনএফ/এসবি


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়