‘জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমবে’
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা
“মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে একাধিকবার নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। আশা করছি, জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমবে। মূল্যস্ফীতি না কমলে হয়ত আবারও নীতি সুদহার বাড়ানো হতে পারে।”
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।
তিনি বলেছেন, “নীতি সুদহার বাড়ানোর বিষয়ে ব্যবসায়ীরা মোটেই খুশি নন। কারণ, ব্যাংক ঋণের জন্য তাদের অতিরিক্ত সুদ গুনতে হয়। বিনিয়োগেও ধীরগতি নেমে আসে। তবে, বিনিয়োগ কমার জন্য শুধু সুদের হার এককভাবে দায়ী নয়। অবকাঠামো উন্নয়ন, জ্বালানি সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ আরো অনেক বিষয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি-হ্রাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের একক প্রচেষ্টায় মূল্যস্ফীতি পুরোপুরিভাবে কমানো সম্ভব নয়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি অন্য সংস্থাগুলোকে ঠিকমতো কাজ করা প্রয়োজন।”
খেলাপি ঋণ সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, “আগে খেলাপি ঋণের তথ্য লুকানো হতো। এখন লুকিয়ে রাখা সব তথ্য প্রকাশের চেষ্টা চলছে। বলা হচ্ছে, খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা বা তার থেকে বেশি। পুরো তথ্য সামনে আসলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ কোটিও ছাড়াতে পারে। ব্যাংকগুলোতে অডিট হচ্ছে। এর পর প্রকৃত খেলাপির তথ্য পাওয়া যাবে।”
হুসনে আরা শিখা বলেন, “গত পাঁচ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন, ব্যাংকিং টাস্কফোর্স গঠন, ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে, কিছু সুফল পাওয়া গেছে। কিছু ফলাফল আসতে আরো সময় লাগবে। ২০২৫ সালের শেষে কোন ব্যাংকের মাধ্যমে কত টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, সে বিষয়ে জানা যাবে। পাচারের টাকা ফেরত আনা সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।”
তিনি বলেন, “আর্থিক খাতে এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীলতা ফিরে না আসলেও ভীতি কেটে গেছে।”
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। ফলে, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমেছে। সুদহার বাড়ার কারণে সংকটেও অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। গত নভেম্বরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধি গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জুলাই-ডিসেম্বর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ৯ দশমিক ৮ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।
ঢাকা/এনএফ/রফিক