শিল্পে গ্যাসের মূল্য ও শুল্ক বাড়লে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে: ঢাকা চেম্বার

শিল্প ও ক্যাপটিভে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ টাকা ও ৩১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব করেছে পেট্রোবাংলা। এছাড়া, ৪৩টি পণ্যের ওপর ভ্যাট ও শুল্ক হার দ্বিগুণ করার উদ্যোগের পাশাপাশি মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, এসি ও কম্প্রেসার প্রভৃতি শিল্পে আয়কর ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 

এ সিদ্ধান্তের কারণে দেশে সামগ্রিক ব্যবসায়িক কার্যক্রমের পাশাপাশি স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই, এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। 

সংগঠনটি বলছে, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও ভ্যাট-শুল্কের হার বাড়ানোর ফলে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এতে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে, মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দীর্ঘমেয়াদি কর সুবিধার পাশাপাশি নীতি ধারাবাহিকতার প্রতিশ্রুতি রক্ষার মাধ্যমে স্থিতিশীল ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখা আবশ্যক।  

ডিসিসিআই মনে করে, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত না করেই দাম দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধির প্রস্তাব নিঃসন্দেহে দেশের শিল্প খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। গ্যাসের দাম ও ভ্যাট-শুল্কের হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ব্যবসার খরচ কয়েক গুণ বাড়বে।  গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রয়াস সামগ্রিক বিনিয়োগের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, নতুন শিল্প স্থাপনের সম্ভাবনা কমাবে এবং বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করবে। ফলে, রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে দুর্বল করবে এবং এটি স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস করবে। 

দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে মোটরসাইকেল, রেফ্রিজারেটর, এসি এবং কম্প্রেসার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর করের হার দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এসব খাতে প্রতিশ্রুত কর সুবিধা ২০৩২ সাল পর্যন্ত বহাল থাকার কথা থাকলেও তা হঠাৎ করে যে পরিবর্তন করা হলো, তা বিনিয়োগের জন্য নেতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করবে। 

বিদ্যমান এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব এবং বিভিন্ন পণ্যের ওপর ভ্যাট ও করের হার বৃদ্ধি সামগ্রিক অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। তাই, ডিসিসিআই মনে করে, দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সরকার, বেসরকারি খাতসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা একান্ত জরুরি। 

এ অবস্থায় দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক অগ্রগতির কথা বিবেচনায় রেখে পেট্রোবাংলা প্রস্তাবিত শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির উদ্যোগ পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সেই সঙ্গে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় ও মূল্যস্ফীতির চাপ হ্রাসের লক্ষ্যে এ মুহূর্তে ভ্যাট এবং কর হার বাড়ানোর উদ্যোগ পুনঃবিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।