দেশে কোটিপতি আমানতকারী বাড়ছে

দৈনন্দিন জীবনের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ। অপরদিকে বাড়ছে পুঁজিপতিদের আয়। তিন মাসে ব্যাংকে বেড়েছে ৪ হাজার ৯৫৪টি কোটিপতি আমাতনকারীর সংখ্যা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার ছাড়িয়েছে। ওই বছর সেপ্টেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৭ হাজারের বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীরা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৩২ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩২টি। ওই সময় পর্যন্ত এসব আমানতকারীদের মোট আমানতের স্থিতি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। ওই বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীরা সংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ২০ লাখ ২৮ হাজার ২৫৫টি। এসব হিসাবে জমা ছিল ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৩ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ব্যাংক খাতের আমানতকারীদের হিসাবের সংখ্যা বেড়েছে ১২ লাখ ১৯ হাজার ২৭৭টি। এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ৪৫ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীদের হিসাব বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২২ হাজারের বেশি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতি আমানতকারীদের হিসাব ছিল এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোটিপতি আমানতকারীদের হিসাব সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। ২০২১ সালে ছিল এক লাখ ১৯৭৬টিতে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে কোটি টাকা আমানতকারীর হিসাবের সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০টি। এভাবে বাড়ছে কোটিপতি আমানতকারীর হিসাব।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।
এক শ্রেণির মানুষের অর্থ বেড়ে যাওয়া দেশে বৈষম্য বাড়ার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আর্থিক খাতের সংস্কার চলমান রয়েছে। সরকার বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ দেশে ফিরেয়ে আনতে চেষ্টা করছে। অপরদিকে ব্যাংকগুলোতে সুদের হার বেশি থাকায় আমানতকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে আমানত রাখছে। ফলে হিসাবগুলোতে টাকার অঙ্ক বাড়ছে। বাড়ছে কোটিপতি হিসাবধারী আমানতকারীর সংখ্যাও।
ঢাকা/এনএফ/এনএইচ