বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। বহিঃনিরীক্ষকের অডিটে বিভিন্ন অনিয়ম-জালিয়াতিতে তার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রবিবার (৬ এপ্রিল) ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করে এস আলম গ্রুপ। বিভিন্ন উপায়ে শুধু এই ব্যাংক থেকে তারা ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়ার তথ্য উঠে এসেছে ব্যাংকের নিরীক্ষায়। এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর ব্যাংকটিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন মনিরুল মওলা। দ্রুততার সঙ্গে তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকটির পর্ষদের বেশির ভাগ সদস্য ও অধিকাংশ ডিএমডি পলাতক অবস্থায় আত্মগোপনে চলে যান।

সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপের ঋণ অনিয়মের সঙ্গে  মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এ কারণে পর্ষদ সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। তার ঋণ অনিয়ম তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্ষদ। চিঠিতে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অপসারণ করার জন্যও বলা হবে।

মুনিরুল মওলার ছুটি ৭ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। এদিকে, ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খানকে ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব দিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ২২ আগস্ট এস আলম গ্রুপের দখলে থাকা বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়।  একই সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদের নতুন বোর্ড গঠন করে দিয়ে ৫ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে রূপালী ব্যাংকের সাবেক  ব্যবস্থাপনা পরিচালক ( এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদকে।

এছাড়া ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল জলিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফাইন্যান্স সাবেক অধ্যাপক ড. এম মাসুদ রহমান এবং মো. আব্দুস সালাম।