ঢাকা     শুক্রবার   ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৬ ১৪৩১

ডিএসইর চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজার সংকুচিত হওয়ায় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৬, ৯ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৮:২৬, ৯ জানুয়ারি ২০২৫
পুঁজিবাজার সংকুচিত হওয়ায় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ

বৃহস্পতিবার ঢাকা ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ডিএসইর চেয়ারম্যানসহ পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেছেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা যে অনিয়ম ও অদক্ষতাকে লালন করেছি, সেটাই পুঁজিবাজারকে ইতিবাচক হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আমরা পুঁজিবাজারকে ভীষণভাবে সংকুচিত করে ফেলায় তা অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।”

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ঢাকা ক্লাবে ‘পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, ডিএসইর পরিচালক মো. শাকিল রিজভী ও মিনহাজ মান্নান ইমন, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মাজেদা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, “গত ১০ বছরে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা মূল্যের দুর্বল আইপিও বাজার এসেছে। আমাদের ভালো কোম্পানি আছে, তবে সেটা একেবারেই নগণ্য। বাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১০ বছরে অর্ধেকে নেমে এসেছে। সক্রিয় বিনিয়োগকারী আরো অনেক কম।”

তিনি বলেন, “পুঁজিবাজারে সক্ষমতা পরিমাপের অন্যতম একক হলো বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ। বর্তমানে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ১ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। কর্পোরেট বন্ডের পরিমাণ যদিও ১ শতাংশ বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে তা ০.৫১ শতাংশের বেশি নয়। বাজারে নতুন আইপিও, কর্পোরেট বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ড আমাদের অগ্রাধিকারে আছে।”

ডিএসইর চেয়ারম্যান আরো বলেন, “কোম্পানিগুলোকে যদি আমরা সক্ষম করতে না পারি, তাহলে হয়ত আমরা আবারো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে যাব। কোম্পানিগুলোকে সক্ষম করতে হলে কিছুটা সময় লাগবে। ডিএসইকে সামনে এগিয়ে নিতে দক্ষ মানবশক্তি লাগবে। আমরা নেতৃত্বের গুণাবলীসম্পন্ন লোকবল নিয়োগ দিচ্ছি। আমরা আশা করছি, বাজারে বিনিয়োগকারীরা আবার ফিরে আসবে। আইটি সিকিউরিটি অডিটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিএসই ওয়েবসাইটটাকে আমরা রিভাইব করছি। বিশেষ করে, কীভাবে আইপিওকে ডিজিটালাইজ করা যায়। বন্ড মার্কেটেও পরিচালনা সমস্যা। আমরা বিএসইসির সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করছি।”

মমিনুল ইসলাম বলেন, “আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের নিয়ে কাজ করছি যেন কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ইনসাইডার ট্রেড এবং ম্যানুপুলেশন কীভাবে রোধ করা যায়, তা নিয়ে কাছ করছি। মার্কেট ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে রিসার্চ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বাজারে রিসার্চের মাত্রা খুবই কম। এটা কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে কাজ করছি।”

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আমাদের চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে না। আমরা সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করছি।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, “ডিএসইর সুরক্ষা যদি আইনগত হয়, তাহলে আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারব। সিসিবিএল থাকবে, এমনটা আমরা চাই না। বিএসইসি, ডিএসই, সিসিবিএল এ বিষয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই দক্ষতাকে গুরুত্ব দিচ্ছি।”

ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, “ডিএসই যদি প্রভাবমুক্ত থাকতে পারে, তাহলে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ১৫ বছরের অনিয়মের বিচার-বিশ্লেষণ করা দরকার। আপনাদের কাছ থেকে কিছু তথ্য উঠে এসেছে। তবে সামগ্রিকভাবে সকল অনিয়মের তথ্য উঠে আসছে না। আপনারা সহযোগিতা করলে অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া আমাদের জন্য সহজ হয়। আপনারা তুলে নিয়ে আসুন, আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি।”

ঢাকা/এনটি/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়