ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সাংবাদিকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করলেন প্রধান বিচারপতি

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাংবাদিকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করলেন প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : আইন-আদালত বিটের সাংবাদিকদের এক কর্মশালায় সাংবাদিকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

বুধবার জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সুপ্রিম কোর্ট কমিটি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন যৌথভাবে আইন বিটের সাংবাদিকদের জন্য এ কর্মশালার আয়োজন করে।

সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় আইন ও আদালত বিটের ৭০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

সাংবাদিকদের অনুরোধে প্রধান বিচারপতি তার সাংবাদিকতা জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, বিচারপতি এম এ আজিজ সাহেবের অনুরোধে আমি কিছুদিন দৈনিক সংবাদে কাজ করেছি। ওই সময় সংবাদের সম্পাদক ছিলেন উনার বন্ধু বজলুর রহমান। আমি তখন অনেক ব্যস্ত আইনজীবী। বিচারপতি এম এ আজিজ সাহেব বললেন যে, আমি কথা দিয়ে ফেলেছি বজলুর রহমান সাহেবকে, কিছু দিন সাংবাদিকতা করেন। তখন আমি সাংবাদিকতা শুরু করি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা যখন কাজ করেছি, তখন বর্তমান আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম আমাদের সমিতির সভাপতি ছিলেন। আমি কোনো দায়িত্বে ছিলাম না। আমাকেও থাকার জন্য বলেছিলেন। আমি বলেছি, আমি থাকতে পারব না। আমি আমার প্র্যাকটিস নিয়ে ব্যস্ত থাকব। আমি আপনাদের সাথে আছি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সময় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় বিভিন্ন বিচারপতির বিব্রত বোধ করা, এটা আমরা খুব ভালোভাবে রিপোর্ট করেছি। বিভিন্ন আদালতে যাচ্ছে, বিভিন্ন আদালত বিব্রত হচ্ছে। এগুলোই ছিল তখন হট নিউজ। নিদারাবাগ হত্যাকাণ্ড মামলায় ডেথ রেফারেন্সের রিপোর্ট করেছি।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোর্টে জজ সাবেহরা কী কথা বলেন, সেটাও কিন্তু আপনারা লিখে দেন। কিন্তু কোর্টের যেটা রেকর্ডে আছে, সেটা রিপোর্ট করা উচিৎ। অনেক সময় অনেক কথা জজ সাহেবরা বলেন। বিদেশে কিন্তু জজ সাহেবরা এত কথা বলেন না।

তিনি বলেন, আমরা যে কথা বলি সেই কথা অনেক সময় সংবাদপত্রে লেখা হয়। এটা নিয়ে দুই-একবার সাংঘাতিক হুলুস্থুল কাণ্ড হয়েছে সারা দেশে। নিশ্চয় আপনারা জানেন, আমি কোনটাকে ইঙ্গিত করেছি। এটা নিয়ে সাংঘাতিক হৈ চৈ হয়েছে। জজ সাহেব কিন্তু অনরেকর্ড কিছু লিখেন নাই। উনি যা বলেছেন, মৌখিকভাবে বলেছিলেন। এটা আপনারা হুবহু লিখেছেন। তারপর সারা দেশে তুলকালাম।

প্রধান বিচারপতি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বলব যে, জাজেরা যা বলেন, অনেক সময় অনেক কথা কথার ছলে বলে ফেলেন। সুতরাং এসব কথা কতটা রিপোর্ট করবেন- আমার মনে হয় যে, যেটা অনরেকর্ড সেটাই করা উচিৎ।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের একটা দায়িত্ব আছে। আর কোর্ট সেন্সিটিভ জায়গা। এখন মানুষের বিরাট আকর্ষণ কোর্ট রিপোর্টিং। আমার মনে হয়, মানুষ কোর্ট রিপোর্ট যত যত্ন সহকারে পড়ে, অন্য কোনো রিপোর্ট এত যত্ন সহকারে পড়ে না।

তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করে বলেন, জজ সাহেবরা যে বিভিন্ন কথা বলেন, এগুলো লেখার সময় আপনারা একটু কেয়ারফুল হোন।

হাইকোর্টের বিভিন্ন কোর্টে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার না দেওয়ার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা আমি দেখব। কারণ, বিদেশেও কিন্তু প্রত্যেক কোর্টে সাংবাদিকদের বসার জায়গা থাকে। আমি ১৯৯৩ সালে ইংল্যান্ডে গিয়েছি। সেখানে দেখেছি, হাউজ অব লর্ডসে (তখন হাউজ অব লর্ডস ছিল, এখন সুপ্রিম কোর্ট অব ইংল্যান্ড হয়েছে) সাংবাদিকদের বসার জায়গা থাকে। আমি বলব যে, আপনাদের যাতে বাধাবিপত্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখব।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮/মেহেদী/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়