ঢাকা     বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১৯ ১৪৩১

আবরারের পর আলোচনায় সনি-দ্বীপ হত্যাকাণ্ড: সহযোগিতায় প্রস্তুত বুয়েট

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ১১ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ২০:৫১, ১১ ডিসেম্বর ২০২১
আবরারের পর আলোচনায় সনি-দ্বীপ হত্যাকাণ্ড: সহযোগিতায় প্রস্তুত বুয়েট

আবরার ফাহাদ হত্যার রায়ের পর বুয়েট যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ রায়হান দ্বীপ এবং কেমিকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিকুন নাহার সনির বিচারের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা উঠে।

তবে তাদের পরিবার চাইলে এসব বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতায় প্রস্তুত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েট উপাচার্য সত্য প্রাসাদ মজুমদার জানান, আমরা চাই না কোন শিক্ষার্থী নির্যাতনের এ জাতীয় হত্যাকাণ্ডের সম্মুখীন হোক। আবরার হত্যার যথাযথ বিচার হয়েছে। আমরা সেটা দ্রুত কার্যকর চাই। একইসঙ্গে আমরা সনি ও দ্বীপ হত্যার বিচারও চাই। তাদের পরিবার চাইলে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

আরো পড়ুন:

তিনি বলেন, আমরা সনি-দ্বীপ হত্যা মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানার চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল সাইট বিষয়টি দেখছে। যথাযথ তথ্য এবং তাদের পরিবারের আগ্রহের ভিত্তিতে মামলাগুলো পরিচালনায় সহযোগিতা করতে চাই।

২০০২ সালের ৮ জুন মোকাম্মেল হায়াত খান মুকির নেতৃত্বে বুয়েট ছাত্রদলের এক গ্রুপের সঙ্গে গোলাগুলি শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের টগর গ্রুপের সঙ্গে। গুলিবর্ষণের মধ্যে পড়ে আহসান উল্লাহ হলের সামনে বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের (৯৯ ব্যাচ) ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

এ ছাড়া হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির বিরোধিতা করার অভিযোগে ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ রায়হান দ্বীপকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল ইসলাম হলের সামনে কুপিয়ে জখম করা হয়। প্রায় তিন মাস পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জুলাই মারা যান দ্বীপ।

এ ঘটনায় হেফাজত কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থাপত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মেজবাহ উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।

জানতে চাইলে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান জানান, আমরা সনি, দ্বীপ হত্যার বিচার কার্যকরে অবশ্যই সহযোগিতা করবো। আবরার হত্যাকাণ্ডের বিচারে আমরা আর্থিক সহযোগিতাও করেছি। সুষ্ঠু বিচার পেয়েছে তাদের পরিবার। সনি-দ্বীপ হত্যার বিচারে আর্থিক সহযোগিতার জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোন দাবি ছিল না। তাই আর্থিক সহযোগিতা না দিলেও অন্যান্য সকল সহযোগিতা করেছি।

তিনি বলেন, আবরার হত্যার বিচারের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আর্থিক সব সহযোগিতার দাবি ছিল। আমরা সেটা মেনে নিয়েছি। সনি-দ্বীপ হত্যার বিচারেও তাদের পরিবার চাইলে আমরা আমাদের নিয়মানুযায়ী সার্বিক সহযোগিতা করবো।

এদিকে গত ৮ ডিসেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বুয়েটের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার জানিয়েছিলেন, ঘটনার পরই আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাডেমিক ব্যবস্থা নিয়েছি। আদালতেও আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই কামনা করেছিলাম। এ রায় প্রতীক্ষিত ছিল।

তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত বিচার হয়েছে। রায় দ্রুত কার্যকর করাই আমাদের এখনের দাবি। ভবিষ্যতে এইরকম কর্মকাণ্ড যদি কেউ করেন তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ রায় সে নজির তৈরি করেছে। আবরার হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আমরা তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আসছি। মামলার শুরু থেকে সব ধরনের ব্যয় বুয়েট থেকে বহন করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আমাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

/এনএইচ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়