ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা বাতিলের দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতি‌বেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০০, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩   আপডেট: ২১:০১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা বাতিলের দাবি

সদ‌্য ঘোষিত ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার বিজ্ঞপ্তিকে প্রহসনমূলক অ্যাখ্যা দিয়ে এটি বাতিলের দাবি জা‌নি‌য়ে‌ছেন ফলাফল প্রত্যাশীরা।

সেইসঙ্গে বর্তমান পছন্দ তালিকা বাতিল করে অধিকসংখ্যক প্রার্থীর চাকরির সুপারিশের ব্যবস্থা করতে এবং আগের বিসিএসগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বৈষম্য হ্রাস করতেও দাবি জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধনে এই দাবি ক‌রেন বিক্ষুদ্ধ ৪৩তম বিসিএস’র ফলাফল প্রত্যাশীরা।

তারা বলেন, আমরা ৪৩তম বিসিএস ফলাফল প্রত্যাশীরা অন্য বিসিএসগুলোর তুলনায় মারাত্মক বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। প্রত্যেক চাকরিপ্রত্যাশী বিসিএস’র দীর্ঘ পথচলা শেষ করে একটি চাকরি পাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। এতদিন এই অপেক্ষার সুমিষ্ট ফল পাওয়া যেত। ক্যাডার না পেলেও নন-ক্যাডারে পাওয়া চাকরির মাধ্যমে পরিবারের মুখে ফুটতো হাসি। অথচ ৪৩তম বিসিএসে সেই পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার বিজ্ঞপ্তি দেখে হতাশ এবং উদ্বিগ্ন।

তারা আরও বলেন, ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডার থেকে ২ হাজার ৯৬৫ জনকে সুপারিশ করা হয়েছিল। এরপর এটিকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য ৪০তম বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নেয় পিএসসি৷ ওই বিসিএসে নন-ক্যাডারের জন্য ৪ হাজার ৪৭৮ পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, যেখান থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত হন ৩ হাজার ৬৫৭ জন। ৪১তম বিসিএসে নন-ক্যাডারের বিজ্ঞপ্তি ছিল ৪ হাজার ৫৩ জন যেখান থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত হন ৩ হাজার ১৬৪ জন। বাকি পদগুলো যোগ্য প্রার্থীর অভাবে ফেরত যায় যেগুলো মূলত টেকনিক্যাল পদ। আর ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার বিজ্ঞপ্তিতে মাত্র ১ হাজার ৩৪২টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে জেনারেল প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ আছে মাত্র ৩৬০টি পদ, যা নজিরবিহীন।

শুধু তাই নয়, ৩৬০টি জেনারেল পদের মধ্যে ২৭৯টি পদ ১২ গ্রেডের। ১৫০০ নম্বরের বিসিএস পাশ করে ১২ গ্রেডের চাকরিও হচ্ছে না ব‌লেও দা‌বি ক‌রেন তারা।

বৈষম্যের ব্যাখ্যা দিয়ে ফলাফল প্রত্যাশীরা বলেন, ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডারের ১ হাজার ৩৪২ পদের মধ্যে ৮৮৮টি পদই ৪১তম থেকে ফেরত আসা পদ৷ অর্থাৎ, ওই বিসিএসে যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় সেগুলো খালি ছিল যা ৪৩তম বিসিএসে দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে আমাদের জন্য নতুন পদ এসেছে মাত্র ৪৫৪টি৷ আমরা কোনোভাবেই এটা মানতে পারছি না। আমরা আমাদের আস্থার জায়গা পিএসসিকে সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানাচ্ছি।

আক্ষেপ করে তারা বলেন, আগে কখনও ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু এবার পিএসসি একসঙ্গে ফলাফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে নন-ক্যাডারের পদ অপ্রত্যাশিত হারে কমে গেছে। নন-ক্যাডারের এত কম পদের কারণে ৩ বছর অপেক্ষা করে থাকা প্রার্থীরাই শুধু হতাশ হবেন না, হতাশ হবে তাদের প্রত্যেকের পরিবার। এছাড়া এতে বেকারত্বও বাড়বে।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদের ফলাফল আলাদা প্রকাশের দাবিতে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সামনে মানববন্ধন করেন ৪৩তম বিসিএস ফল প্রত্যাশীরা।

মানববন্ধনে ফলাফল প্রত্যাশীরা চারটি দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবির মধ্যে ছিল- ক্যাডার ও নন-ক্যাডার ফলাফল পৃথক সময়ে প্রকাশ করা, ৪০ ও ৪১তম বিসিএসের ন্যায় নন-ক্যাডার থেকে অধিকসংখ্যক প্রার্থীকে সুপারিশ করা, পূর্বতন বিসিএস হতে ইতোমধ্যে সুপারিশকৃতদের একই চাকরিতে পুনরায় সুপারিশ না করা এবং ক্যাডার ও নন-ক্যাডার নিয়োগে প্যানেলের ব্যবস্থা করা।

এর আগে রোববার (১০ ডিসেম্বর) একই দাবি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ৪৩তম বিসিএসের ফলাফল প্রত্যাশীরা।

নঈমুদ্দীন/ফয়সাল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়