ঢাকা     সোমবার   ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৫ ১৪৩১

ঢাবি’র শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারে ইউট্যাবের নিন্দা ও প্রতিবাদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪১, ১ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৪:৪৮, ১ আগস্ট ২০২৪
ঢাবি’র শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারে ইউট্যাবের নিন্দা ও প্রতিবাদ

‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. নুসরাত জাহান চৌধুরী এবং একই বিভাগের প্রভাষক শেহরীন আমিন ভুঁইয়াসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারী ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সঙ্গে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এনে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ইউট্যাব প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম এবং মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান।

বিবৃতিতে তারা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো দল বা সরকারের অনুগত বাহিনী না হয়ে পেশাদার আচরণ বজায় রাখার আহ্বান জানান। 

তারা বলেন, বাংলাদেশের জন্মই হয়েছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং মানবাধিকার, সাম্য ও গণতন্ত্রের জন্য। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পরই দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করেছে। ফলে দেশের কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে গেছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুলিশের বুটের তলায় পিষ্ট।

নেতৃদ্বয় বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী যারা জনগণের সেবক হওয়ার কথা, তারা এখন ভক্ষক ও নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। 

তারা বলেন, বুধবার (৩১ জুলাই) ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনকালে ছাত্রছাত্রীদেরকে পুলিশের হাত থেকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হতে রক্ষার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নুসরাত জাহান চৌধুরী এবং প্রভাষক শেহরীন আমিন ভুঁইয়া এগিয়ে গিয়েছিলেন। অথচ পুলিশের পোশাক পরিহিতি পুরুষ সদস্যরা তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছে। এমনকি বুট দিয়ে একজন ছাত্রকে পারা দিয়ে গলা চেপে টেনে হিঁচড়ে আটক করে নিয়ে গেছে। এ ধরনের অমানবিক ও নির্মম আচরণ অসভ্য ও বর্বর ব্যক্তি ছাড়া কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। 

এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, একইসঙ্গে এহেন ঘৃণ্য আচরণের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাই।

ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা জনগণের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত হন। কোনো দলের হয়ে অপেশাদার আচরণ করবেন না। কোনো একটি দলের অন্যায়-দুর্নীতির অংশীজন হবেন না। আপনারা জনগণকে সম্মান করুন। তাহলে আপনারাও সম্মান পাবেন। তা না হলে এই অবৈধ ও বিনাভোটের সরকারের সেবক হতে গিয়ে জনগণের যে ক্ষোভ এবং রুদ্র রোষ, সেখান থেকে কেউই নিস্তার পাবেন না।

ইতিমধ্যে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে গুলি চালিয়ে আড়াই শতাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ও ভাবমূতি ক্ষুন্ন করেছে। এর দায় অবৈধ আওয়ামী সরকারের পাশাপাশি তাদের অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এড়াতে পারে না। আমরা বলবো, দেশের জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ কখনও লাভবান হয়নি। আপনারা জনগণের বিরুদ্ধে অংশ নেবেন না। সুতরাং আপনারা অন্যায়ভাবে কাউকে সমর্থন দিয়ে নিজেদের বিপদ ডেকে আনবেন না এবং জনগণের কাছে ঘৃণার পাত্র হবেন না। 

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, সর্বোচ্চ আদালত সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ মেধা ও ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু দাবিনামা পেশ করেছেন। এর মধ্যে কোটা সংস্কারের পাশাপাশি অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়া, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া ও তাদের হয়রানি না করা, আটক ৬ জন সমন্বয়ককে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া, প্রতিটি খুনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস এবং নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়টি অন্যতম। আমরাও শিক্ষার্থীদের এসব দাবিকে যৌক্তিক মনে করি। সুতরাং চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের এসব দাবির ব্যাপারে সরকারকে অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এমএ/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়