ঝরে পড়া তারা
অভিমান করে দেশান্তরী অঞ্জু ঘোষ
![অভিমান করে দেশান্তরী অঞ্জু ঘোষ অভিমান করে দেশান্তরী অঞ্জু ঘোষ](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2020June/bg/anju_risingbd20200617131906.jpg)
অঞ্জু ষোষ
চলচ্চিত্রে পা রেখে অনেকেই পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা। আবার কেউ কেউ ছিটকে পড়েছেন। অনেকে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে এই অঙ্গনকে ‘গুডবাই’ বলেছেন।
এমনো আছেন, দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেও বিয়ের পর হঠাৎ চলচ্চিত্র ছেড়ে ‘পাক্কা সংসারী’ হয়েছেন। ঝরে পড়া এসব তারাদের নিয়ে রাইজিংবিডির বিশেষ আয়োজন। আজ দশম পর্বে থাকছেন অভিনেত্রী অঞ্জু ষোষ।
বাংলাদেশের এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জু ঘোষ। ঢাকাই চলচ্চিত্রে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমার নায়িকা তিনি। তার প্রকৃত নাম অঞ্জলি ঘোষ। ফরিদপুরের ভাঙ্গায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভোলানাথ অপেরায় যাত্রায় নৃত্য পরিবেশন করতেন ও গান গাইতেন এই নায়িকা।
১৯৭২ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের মঞ্চনাটকে সুনামের সঙ্গে অভিনয় করেন। ১৯৮২ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা এফ কবির চৌধুরীর ‘সওদাগর’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। এরপর ঢালিউডে প্রায় অর্ধ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করে এই শিল্পী।
সালটা ১৯৮৯। এ বছর অঞ্জু অভিনীত ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ মুক্তি পায়। সিনেমাটি মুক্তির পর আকাশচুম্বী দর্শকপ্রিয়তা পান অঞ্জু ঘোষ। এরপরই তার দর্শক চাহিদা দুই বাংলায় সমানভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। দুই বাংলার দর্শকপ্রিয় হয়ে উঠেন অঞ্জু ঘোষ।
তারপর ‘মধুমালা মদন কুমার’, ‘কন্যা’ সিনেমার কাজ শেষ করেন। ১৯৯৫ সালে ‘নেশা’ সিনেমার কাজ শেষ হওয়ার আগেই ১৯৯৬ সালে কলকাতায় পাড়ি জমান তিনি। তখন কলকাতায় অঞ্জুর বেশ ভালো চাহিদা ছিল। এর পরে আর বাংলাদেশের সিনেমায় কাজ করেননি তিনি। জানা যায়, অভিমান করেই দেশ ছেড়েছেন অঞ্জু। তবে কী অভিমান তা পরিষ্কার করেননি এই অভিনেত্রী।
কলকাতার চলচ্চিত্র ও মঞ্চে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন অঞ্জু। কলকাতায় বেশকিছু জনপ্রিয় সিনেমায়ও তিনি অভিনয় করেছেন। কলকাতার প্রায় সব শিল্পী সিনেমার পাশাপাশি মঞ্চে কাজ করেন। ২০০৪ সালের দিকে অঞ্জু ঘোষও মঞ্চে কাজ শুরু করেন। এখন বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে কাজ তেমন একটা করছেন না। খবর রটেছে, অঞ্জু অভাব-অনটনে রয়েছেন। কিন্তু এ খবর সঠিক নয় বলে রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন অঞ্জু ঘোষের ঘনিষ্ঠজন পরিচালক সাঈদুর রহমান সাঈদ।
অঞ্জুঘোষ এখন কলকাতার সল্টলেকে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সাঈদুর রহমান সাঈদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমার জানা মতে বাংলাদেশের কারো সঙ্গে অঞ্জু ঘোষ দেখা করেন না। এটা তার অভিমানই বলা যেতে পারে। তবে আমার সঙ্গে অঞ্জুর নিয়মিত কথা হয়। মাঝে মাঝে আমাকে ফোন করেন তিনি। কলকাতা গেলে অঞ্জুর বাসায় আমি সবসময় যাই। আমাদের জন্য অনেক খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করেন। সবসময়ই তার আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছি। আমার সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই ভালো। তাকে আমি সম্মানও করি। অঞ্জুর কলকাতার বাসায় গিয়ে মনে হয়নি তিনি কষ্টে আছেন। বেশ পরিপাটি করে সাজানো-গোছানো তার ঘর। এই ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমেই অঞ্জুর উত্থান। তাই এই ইন্ডাস্ট্রির কথা অঞ্জু এখনো মনে করেন। এখানকার অনেকের কথাই মনে করেন, অনেককে নিয়ে গল্প করেন, তাদের খোঁজখবর জানতে চান।’
সর্বশেষ গত বছর অঞ্জু ঘোষ সাঈদুর রহমান সাঈদের একটি সিনেমার কাজ শুরু করেন। সিনেমাটির কিছু অংশের কাজ শেষ হয়েছে।
ঢাকা/রাহাত সাইফুল/শান্ত
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন