তবে কি সুশান্ত পারভীন ববির মতো মহেশ ভাটের শিকার
বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের হৃদয়ের স্পন্দন থেমে গেছে গত ১৪ জুন। কিন্তু থামেনি এই অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আত্মহত্যা করেছেন তিনি। কিন্তু এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সুশান্ত ভক্তকুল। রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই।
রহস্যের সূত্রপাত নির্মাতা মুকেশ ভাটের একটি কথার মাধ্যমে। তিনি নাকি সুশান্তের এমন পরিণতি আঁচ করতে পেরেছিলেন। সুশান্তের মানসিক অবস্থা নাকি মৃত্যুর আগে অভিনেত্রী পারভীন ববির মতোই ছিল!
এখানেই দুয়ে দুয়ে চার মেলাচ্ছেন অনেকে। অভিনেত্রী কঙ্গোনা রাণৌত তো বলেই ফেলেছেন, ‘পারভীন ববির সঙ্গে কী ঘটেছিল সবাই জানে।’ কঙ্গোনা এখানে স্পষ্টতই অভিযোগের তীর ছুড়েছেন মহেশ ভাটের দিকে। কারণ মহেশ ভাটের সঙ্গে পারভীন ববির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই প্রেম পরিণতি পায়নি।
একইভাবে সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গেও মহেশ ভাটের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। যে কারণে সুশান্ত রিয়ার সম্পর্ক অনেকদিন থেকেই ভালো যাচ্ছিল না। মৃত্যুর আগে বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন সুশান্ত। গত এক বছর সুশান্ত সবার কাছ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। মৃত্যুর আগে ঠিক এই কাজটি পরভীন ববিও করেছিলেন।
সত্তরের দশকের সাড়া জাগানো অভিনেত্রী পারভীন ববি। স্বাধীনচেতা এই নায়িকা পর্দায় হাজির হয়ে দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছিলেন ‘সেক্স সিম্বল’ তকমা। সাবেক ক্রিকেটার সেলিম দুরানির বিপরীতে ‘চরিত্র’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন ববি। সিনেমাটি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়লেও নজর কাড়েন এই অভিনেত্রী। এরপর একের পর এক সিনেমার প্রস্তাব পান। কিন্তু সাফল্য যেন কিছুতেই ধরা দিচ্ছিল না। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ‘মজবুর’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রথম সফলতার ছোঁয়া পান। এরপর ‘দিওয়ার’, ‘অমর আকবর অ্যান্থনি’, ‘নমক হালাল’র মতো দর্শকপ্রিয় ও ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করে তারকা হয়ে ওঠেন। ‘টাইমস’ ম্যাগাজিনে ফিচার হওয়া প্রথম বলিউড অভিনেত্রী তিনি। ক্যারিয়ারে খ্যাতি, প্রাচুর্য সবই পেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে সুখী ছিলেন না।
বলিউডের অনেক অভিনেতার সঙ্গেই ববির প্রেমের সম্পর্কের কথা শোনা যায়। তাদের একজন কবির বেদী। নির্মাতা মহেশ ভাটের সঙ্গে প্রায় তিন বছর লিভ টুগেদার করেছেন ববি। কিন্তু প্রতারিত হওয়ায় ভেঙে পড়েছিলেন এই নায়িকা। এমন সময় ববির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মহেশ ভাট নির্মাণ করেন সেমি-অটোবায়োগ্রাফি সিনেমা ‘অর্থ’। এতে ববি আরো ভেঙে পড়েন। ক্যারিয়ার তুঙ্গে থাকতেই সব ছেড়ে আধ্যাত্মিক জীবন বেছে নেন।
জীবনের করুণ এক পর্যায়ে ববি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হন। বিষণ্ণতা এমনভাবে মনে চপে বসে, ধীরে ধীরে সবার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে নেন। সুশান্ত সিং রাজপুতের মতো পারভীন ববিও মনে করতেন- তাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। সহ-অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, বিল ক্লিনটনসহ বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তি ও সংস্থার বিরুদ্ধে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন ববি। ধীরে ধীরে চার দেয়ালে নিজেকে বন্দি করে ফেলেন।
২০০৫ সালের ২২ জানুয়ারি, তিনদিন ধরে ঘরের বাইরে পত্রিকা ও দুধ পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ববির লাশ উদ্ধার করে। তার ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল পেইন্টিং, ওষুধ, কাপড়, পুরোনো পত্রিকা এবং একটি হুইল চেয়ার। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনদিন ধরে না খেয়ে ছিলেন; এতেই মৃত্যু হয়েছে। তবে পারভীন ববির মৃত্যু ভক্তদের কাছে এখনো রহস্য হয়েই আছে। ভক্তদের বড় অভিযোগ তাদের প্রিয় নায়িকাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তারা প্রিয় নায়ক সুশান্তের মৃত্যুর পর একই কথা বলছেন।
* মেয়ে না হলে পূজাকে বিয়ে করতেন মহেশ ভাট
ঢাকা/মারুফ/তারা
রাইজিংবিডি.কম