সিনেমার মতোই যশ-রাধিকার প্রেমের গল্প
কন্নড় সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা নবীন কুমার। ইন্ডাস্ট্রিতে ‘যশ’ নামেই তিনি পরিচিত। ‘কেজিএফ’ সিনেমার মাধ্যমে বিশেষ খ্যাতি পেয়েছেন রকিং স্টার হিসেবে পরিচিত এই অভিনেতা।
ব্যক্তিগত জীবনে অভিনেত্রী রাধিকা পণ্ডিতকে বিয়ে করেছেন তিনি। সিনেমার মতো তাদের প্রেম নিয়েও রয়েছে নানা গল্প। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির কাউকে বিয়ে করবেন এমন চিন্তা কখনোই মাথায় ছিল না যশের। কিন্তু সিনেমার শুটিংয়ে রাধিকাকে দেখেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন। প্রথম দেখায় প্রেম বলতে যা বোঝায়, সেটাই যেন সত্যি হলো।
অশোক কাশ্যপের ‘নন্দগোকুলা’ টিভি ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন যশ-রাধিকা। এই ধারাবাহিকের সেটেই ২০০৪ সালে তাদের প্রথম দেখা। একই ক্যাবে চড়ে সেটে গিয়েছিলেন কিন্তু সেদিন তাদের কথা হয়নি। কারণ রাধিকা ধরেই নিয়েছিলেন যশ হয়তো অনেক অহঙ্কারী হবেন। অন্যদিকে যশও রাধিকাকে নিয়ে একই রকম চিন্তা করেছিলেন। এজন্য শেষ পর্যন্ত কোনো কথাই বলেননি তারা।
২০০৮ সালে ‘মোগিনা মানাসু’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে একসঙ্গে বড় পর্দায় পা রাখেন দুজন। এই সিনেমায় প্রথমে যশকে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল না। এরপর ২০১২ সালে ‘ড্রামা’য় পুনরায় জুটি বাঁধেন যশ-রাধিকা। এবার অন্য একটি নায়িকার পরিবর্তে সিনেমায় নেওয়া হয় রাধিকাকে। প্রেমের দেবতা যেন এই জুটিকে এক করতে চাইছিলেন! এভাবেই ধীরে ধীরে তারা পরস্পরে সবচেয়ে কাছের বন্ধুতে পরিণত হয়।
বন্ধুত্ব গভীর হতে হতে তা প্রেমে রূপ নেয়। বিশেষ করে রাধিকাকে মনের কথা বলতে চাইছিলেন যশ। কিন্তু বন্ধুত্ব যেন নষ্ট না হয় সেই ভয়ে কিছুই করতে পারছিলেন না। তবে তার প্রস্তাব দেওয়ার ধরনটি কোনো রোমান্টিক সিনেমার চেয়ে কম ছিল না।
সবচেয়ে কাছের বন্ধু হওয়ায় রাধিকার কাছে প্রেম নিয়ে নানা পরামর্শ চাইতেন যশ। রাধিকাও বিভিন্ন সময় তাকে সাহায্য করতেন। অবশেষে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসেই মনের কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন যশ। রাধিকাকে ফোন করে জানতে পারেন, সিনেমা দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। যশ রাধিকার প্রিয় কিছু জিনিস উপহার নিয়ে সোজা সিনেমা হলে চলে যান। কিন্তু সংকোচে তার সামনে না গিয়ে উপহার রাধিকার গাড়িতেই রেখে আসেন।
এদিকে উপহার দেখেই রাধিকা বুঝতে পারেন— কে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে তারা পরস্পরের সঙ্গে কোনো কথাই বলেননি। পরবর্তী সময়ে যশ ফোনে রাধিকাকে প্রস্তাব দেন। এবারও রাধিকা মুখ ফুটে কিছু বলেননি। পাক্কা ছয় মাস পর যশের নাছোড়বান্দা স্বভাব দেখে ‘হ্যাঁ’ বলতে বাধ্য হন রাধিকা। এরপর থেকে চুটিয়ে প্রেম করতে থাকেন তারা।
এক অনুষ্ঠানে যশ জানান, প্রেম করার সময় প্রায়ই রাধিকাকে নিয়ে ভারতের পর্যটন নগরী গোয়াতে ঘুরতে যেতেন তিনি। বছরে অন্তত চারবার তারা সেখানে যেতেন। ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি এই গোয়াতেই যশ-রাধিকার বাগদান হয়। একই বছর ব্যাঙ্গালুরুতে ঘনিষ্ঠজনদের নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন এই জুটি।
ভালোবাসা দিবস এই জুটির কাছে বিশেষ একটি দিন। কারণ এই দিনই যশের মনের কথা বুঝতে পেরেছিলেন রাধিকা। গত বছর ভালোবাসা দিবসে যশের সঙ্গে তার প্রিয় ছবির কোলাজ পোস্ট করে রাধিকা লেখেন: ‘আজ আমাদের একসঙ্গে দশম ভ্যালেন্টাইন ডে। এই ছবিগুলো বিগত আট বছরের। প্রথম দুই বছরের ছবিগুলো হারিয়ে গেছে। কোনটি আমাদের সবচেয়ে প্রিয় ছবি বলা মোটেও কঠিন নয়। সেই ছবি যেখানে আমরা আমাদের ১০ বছরের পথচলায় তৈরি ভালোবাসার সবচেয়ে সুন্দর ও মূল্যবান জিনিসটি (মেয়ের হাত) ধরে রেখেছি। ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা।’
ঢাকা/তারা