ঢাকা     বুধবার   ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২৯ ১৪৩১

অপু ডাকতেন ‘দাদা’ জায়েদ ‘বাবা’, শাবনূরকে ডাকতেন ‘মা দুর্গা’

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ৭ মার্চ ২০২৩   আপডেট: ১৭:৪৬, ৭ মার্চ ২০২৩
অপু ডাকতেন ‘দাদা’ জায়েদ ‘বাবা’, শাবনূরকে ডাকতেন ‘মা দুর্গা’

চার দশকের ক্যারিয়ারে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’, ‘কোটি টাকার কাবিন’, ‘বিক্ষোভ’সহ চলচ্চিত্রের ১৫০০-এর বেশি গান কোরিওগ্রাফ করেছেন মাসুম বাবুল।

১৯৯৩ সালে ‘দোলা’, ২০০৮ সালে ‘কি জাদু করিলা’ এবং ২০১৮ সালে ‘একটি সিনেমার গল্প’ সিনেমার জন্য নৃত্য পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। দেশের জনপ্রিয় শিল্পীরা তার কোরিওগ্রাফিতে নাচ করেছেন। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে গতকাল (৬ মার্চ) বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর সিদ্দিক বাজারের বাসায় এই নৃত্যনির্দেশকের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নামে ঢালিউডে। 

মাসুম বাবুলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন তার সহকর্মীরা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী এই নৃত্য পরিচালকের সঙ্গে তাদের নানা স্মৃতিচারণ করেন তারা।

টলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা ঋতুপর্ণা ফেসবুকে শোক প্রকাশ করে লেখেন, ‘মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। অনেক অনেক ছবি করেছি তোমার সঙ্গে, বাবুল। কতো গল্প, কতো হাসি, দারুণ দারুণ কাজ। তুমি আমাকে বলতে ‘ম্যাজিক গার্ল’। বড় তাড়াতাড়ি চলে গেলে। অনেক লড়াই করলে। এখন তোমার প্রিয় বন্ধু মান্নাভাই-এর কাছে চলে গেলে। কতো কাজ করেছি আমরা সবাই। সব স্মৃতি হয়ে গেল। ভালো থেকো যেখানেই থাকো।’

নন্দিত নায়িকা শাবনূর বলেন, ‘মাসুম বাবুল আমার অত্যন্ত পছন্দের একজন নৃত্য পরিচালক! অসাধারণ একজন গুণী নৃত্য পরিচালক ছিলেন উনি! উনার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে! উনি সেটে সবসময় সবাইকে অনেক আনন্দে মাতিয়ে রাখতেন! উনি আমাকে মজা করে ‘মা দুর্গা’ বলে ডাকতেন আর বলতেন আমার নাকি ১০টা হাত! দূর থেকে দেখলেই আমাকে বলতেন মা দুর্গা চলে আসছে! আমার অসংখ্য ছবির নৃত্য পরিচালক ছিলেন উনি! আজকে আমাদের মাঝ থেকে উনি এভাবে চলে গেছেন এটা ভাবলেই যেন গাঁ শিউরে উঠছে! হয়তো আরো অনেক নৃত্য পরিচালকই আসবে কিন্তু উনার শুন্যস্থান কখনো পূরণ হবে না! উনার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি! আপনারা যে যেখানে আছেন সবাই উনার জন্যে দোয়া করবেন! আল্লাহ উনাকে বেহেস্ত নসীব করুক।’

চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ফেসবুকে শোক প্রকাশ ও স্মৃতিচারণ করে লিখেন, ‘এই মানুষটাকে আমি দাদা বলে ডাকতাম।কলকাতায় চিকিৎসাকালীন আমাকে বলেছিল শিং মাছের তরকারির ঝোল খেতে চাই। আমি যেভাবে পারি দিয়েছিলাম। সেদিন এস এ হক অলীক ভাইও ছিলেন। খুব মনে পড়ছে দাদা- মা নেই, তুমি নেই, কি বলব জানিনা। ওপারে ভালো থেকো।’

মাসুম বাবুল ও জায়েদ খানের সঙ্গে সর্ম্পক ছিল বাবা-ছেলের মতো। জায়েদ খান তাকে বাবা বলেই ডাকতেন। জায়েদ খান নন্দিত এই নৃত্যপরিচালকের সঙ্গে ছবি প্রকাশ করে ক্যাপশনে স্মৃতিচারণ করে লিখেন, ‘কখনও আর এভাবে বাবা-ছেলে একসঙ্গে দাঁড়ানো হবে না, কেউ বলবে না, আব্বা এভাবে দাঁড়া। কত স্মৃতি কত ঘটনা আপনার সঙ্গে। এগুলো কোনোভাবেই ভুলে থাকা যাবে না। আপনাকে নিয়ে লিখতে গেলে লেখার শেষ হবেনা। আমার জীবনের একটা ছায়া সরে গেল। আপনি ছিলেন চলচ্চিত্রের একটা ডিকশনারি। আল্লাহ আপনাকে পরপারে শান্তিতে রাখুন বাবা।’

এছাড়া বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই শোক প্রকাশ করে স্মৃতিচারণ করেন। গতকাল রাতেই আজিমপুর গোরস্থানে মাসুম বাবুলের লাশ দাফন করা হয়।

রাহাত/ফিরোজ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়