গরু আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিল: ডিপজল
ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। চলচ্চিত্রের পর্দায় এ অভিনেতাকে নেতিবাচক ও ইতিবাচক দুই চরিত্রেই দেখা গেছে। তবে খল অভিনেতা হিসেবেই অধিক পরিচিত তিনি। পর্দায় যেমনই থাকুক না কেন, বাস্তব জীবনে অন্যরকম তিনি। পর্দার এই মানুষটি প্রতি বছর ২৫-৩০টি গরু কোরবানি দিয়ে থাকেন। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি।
পারিবারিকভাবেই ঐতিহ্যবাহী গাবতলীর গরুর হাটের সঙ্গে জড়িত ডিপজল। পাকিস্তান আমল থেকে অধিকাংশ সময় এই হাট পরিচালনা করে আসছে ডিপজলের পরিবার। এ প্রসঙ্গে ডিপজল রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গাবতলীর গরুর হাট পাকিস্তান আমল থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আমরাই ডাকছি, আমরাই চালাইছি। আমি গরুর হাটে বসতাম, ভালোই লাগতো। আর এখন গরুর হাটে গেলে আমাদেরই গরু বানায় ফেলে। পাবলিক গরু দেখা বাদ দিয়ে আমাদের দিকে নজর দেয় বেশি। হাটে ভিড় জমে যায়। গরু বিক্রেতাদের অসুবিধা হয়। জটলা লেগে যায়। এসব কারণে এখন আর হাটে যাওয়া হয় না।’
কোরবানির গরু কীভাবে কিনেন? এ প্রশ্নের জবাবে ডিপজল বলেন, ‘গরু আমি নিজেই পালছি। নিজের পালা গরু প্রতিবছর কোরবানি দেই। ২৫-৩০টা গরু আমার দরকার হয়। এগুলো আমি নিজের খামারে পালন করি। হাট থেকে কিনতে হয় না।’
ছোটবেলার গরু কেনার স্মৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে গরুর হাটে যেতাম। এমন অনেক স্মৃতি রয়েছে। অসংখ্যবার গরুর হাটে গিয়েছি। একবার গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলাম। আমি রশি ধরা ছিলাম। হঠাৎ গরু দৌড় দেয়। গরু আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেছিলো। আমার হাত-পা কেটে গেছিলো।’
গরু পালনের কারণ ব্যাখ্যা করে ডিপজল বলেন, ‘সিনেমায় কাজ করার পর মানুষ আমাকে দেখলেই চিনে ফেলেন। যে কারণে সিনেমায় আসার পর গরু কিনতে হাটে যাই না। গরু আমার শখের পশু। আমার বুঝ হওয়ার পর থেকে কখনো আমার ভিটা থেকে গরু সরেনি। আমি গরু পালন করি। গরু আমার ভালো লাগে। বিশেষ করে গরুর দুধ আমার প্রিয়। নিজের খামার থেকে গরুর খাঁটি দুধ পাওয়া যায়। এই দুধের জন্য গরু পালন করা।’
কোরবানির দিনের ব্যস্ততার কথা জানিয়ে ডিপজল বলেন, ‘প্রতিবার যা করি, এবারো আমার বাড়িতে ঈদের আয়োজন সেভাবেই হয়েছে। ঈদের নামাজ পড়ে কোরবানি দেই। মাংসগুলো ব্যাগে ভরে প্রায় ৩ হাজার মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়। আমরা এ কাজটি নিয়মিত করি। এ ছাড়া আত্মীয়-স্বজন, বিশেষ করে বোনেদের বাসায় কোরবানির মাংস পাঠাই।’
সিনেমার মানুষদের সঙ্গে কোরবানির ঈদ কাটানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিপজল বলেন, ‘মিরপুরে গরু কাটা হয়। সেখানে আমার আরো দুই ভাই গরু কাটেন। তারাও ৮-১০টা গরু কোরবানি দেন। সেখানে সিনেমার পরিচিত ও কাছের মানুষজন আসেন।’
মনোয়ার হোসেন ডিপজলের একমাত্র কন্যা ওলিজা মনোয়ার। বাবার সঙ্গে ঈদের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন কাজিনদের সঙ্গে মিরপুর মসজিদে নামাজ পড়তে যেতাম। ঈদগাহ থেকে বাবা ফিরে এসে আমাদের হাতে বানানো বিশেষ খাবার খেতেন। এখনো প্রত্যেক ঈদে বাবার জন্য বিভিন্ন পদের খাবার রান্না করি।’
মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে খাসির মাংস বিতরণ করে থাকেন ডিপজল। তা উল্লেখ করে ওলিজা মনোয়ার বলেন, ‘আমরা মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের মাঝেও খাসির মাংস বিতরণ করি। এ ছাড়া উটের মাংসও বিতরণ করি।’
ঢাকা/শান্ত