ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

‘বাংলা গান যতদিন থাকবে, আব্দুল জব্বার ততদিন থাকবেন’

নিউজ ডেস্ক  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ৩০ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ১২:৫৫, ৩০ আগস্ট ২০২৩
‘বাংলা গান যতদিন থাকবে, আব্দুল জব্বার ততদিন থাকবেন’

শিল্পী আব্দুল জব্বারের সঙ্গে রাইজিংবিডির প্রকাশক এস এম জাহিদ হাসান

‘‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের শিল্পী আব্দুল জব্বার। তার মতো এমন একজন গায়ক হাজার বছরে আসে না। তার গাওয়া প্রায় সমস্ত গানই জনপ্রিয়। সেগুলো অনেক দিন ধরে টিকে আছে এবং বাংলা গান যতদিন থাকবে, আব্দুল জব্বারও ততদিন থাকবেন বলে আশা করা যায়। তার গান এতোই শ্রুতি মধুর।’’

বুধবার (৩০ আগস্ট) বাংলা গানের কিংবদন্তি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বারকে হারানোর ছয় বছর। মৃত্যুবার্ষিকীতে এই কণ্ঠশিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং স্মতিচারণ করে এসব কথা বলেন রাইজিংবিডির প্রকাশক এস এম জাহিদ হাসান। 

তিনি বলেন, ‘বিবিসি বাংলার জরিপে সর্বকালের সেরা ২০ বাংলা গানের তিনটিই তাঁর গাওয়া। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠ যোদ্ধা ছিলেন আব্দুল জব্বার। তাঁর গাওয়া অসংখ্য গান মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। একজন গায়ক ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর আলাদা মর্যাদা আছে। আবার স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও তাঁর অবদান কিন্তু কম না। আধুনিক গান, ছায়াছবির গান, দেশাত্মকবোধক গানসহ বিভিন্ন ধরনের গানে তার অবদান রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পীর প্রয়াণ দিবসে তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি, তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি এবং তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’ 

শিল্পীর মরদেহে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছিলো রাইজিংবিডির পক্ষ থেকে 

আব্দুল জব্বার দীর্ঘদিন কিডনি, হার্ট, প্রস্টেট ও ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

তিনি ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার গান গাওয়া শুরু ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে। প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন ১৯৬২ সালে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির নিয়মিত গায়ক হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র ‘সংগম’-এর গানে কণ্ঠ দেন তিনি। এরপর ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ সিনেমায় সত্য সাহার সুরে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৭৮ সালে ‘সারেং বৌ’ সিনেমায় আলম খানের সুরে তার গাওয়া ‘ওরে নীল দরিয়া’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অসংখ্য গানে কণ্ঠ দেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আব্দুল জব্বার হারমোনিয়াম নিয়ে কলকাতার বিভিন্ন ক্যাম্পে গিয়ে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেন।

১৯৭১ সালে তিনি মুম্বাইয়ে ভারতের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনমত তৈরিতেও নিরলসভাবে কাজ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে সেসময়ে গণসংগীত গেয়ে প্রাপ্ত ১২ লাখ রুপি দান করেছিলেন। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।

ঢাকা/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়