নজরুলগীতির সুর বিকৃতি: ক্ষুব্ধ সংগীতশিল্পী-নেটিজেনরা, নীরব এ আর রহমান
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা গান ‘কারার ওই লৌহ-কপাট’। বলিউড নির্মাতা রাজা কৃষ্ণা মেনন তার ‘পিপ্পা’ সিনেমায় গানটি ব্যবহার করেছেন। নতুন করে এ গানের সুর করেছেন এ আর রহমান। এতেই বেঁধেছে বিপত্তি, দারুণ বিতর্কের মুখে পড়েছেন এই গায়ক, ক্ষুব্ধ শ্রোতারা।
গানটির সুর বিকৃতি করার কারণে এ আর রহমানের প্রতি আশাহত হয়েছেন দুই বাংলার নেটিজেনরা। বাংলাদেশের একজন লিখেছেন, ‘কাজী নজরুল ইসলামের এমন একটি গানের আত্মাকে ধ্বংস করা হয়েছে। যে গান আমাদের দেশের (বাংলাদেশ) স্বাধীনতার মতো বিষয়ের সঙ্গে জড়িত, যা শুনলে আমাদের মহান বিপ্লবীদের প্রতি মাথা নত হয়ে আসে। তাকে নষ্ট করার অধিকার কারো নেই। এ আর রহমানের মতো শিল্পীর কাছ থেকে এটা আশা করি না। একজন শ্রোতা হিসেবে আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানালাম।’
কৃষ্টি চ্যাটার্জি নামে একজন লিখেছেন, ‘হোক প্রতিবাদ, হোক কলরব। এতটা স্বাধীনতা শুধু স্পর্ধা নয়, দুস্পর্ধা।’ ইন্দ্রানী মুখার্জি লিখেছেন, ‘ছি ছি ছি। এই গান শুনলে যেখানে রক্ত গরম হয়ে যায়, সেখানে এটা শুনে রক্তশূন্য হয়ে যাবে।’ গীতিকা দাস লিখেছেন, ‘এই বিখ্যাত গান নিয়ে ওনাকে কে ছ্যাবলামি করার স্পর্ধা দিয়েছে। উনি বিখ্যাত সুরকার বলেই যা খুশি তা করতে পারেন না।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনি আমাদের আবেগ নিয়ে খেলতে পারেন না।’
এ আর রহমানের সুর করা ‘কারার ওই লৌহ-কপাট’ গানটি শুনতে ক্লিক করুন
সাধারণ শ্রোতা ছাড়াও কলকাতার সংগীতশিল্পীরাও এ বিষয়ে সরব হয়েছেন। বিরক্তি প্রকাশ করে প্রবীণ গায়িকা হৈমন্তী শুক্লা বলেন, ‘এগুলো সহ্য হয় না। অসভ্যতা! আমাদের তো বয়স হয়েছে। এগুলো কী চলছে? বাংলা গান নিয়ে এটা কী হচ্ছে?’ একই সুর কলকাতার গায়ক শিলাজিতেরও। তার ভাষায়, ‘অন্য প্রদেশের মানুষেরা হয়তো এই গানের মর্ম বুঝবে না। কিন্তু আমরা বাঙালিরা তো বুঝি এই গানের মধ্যে যে আবেগ রয়েছে, তা নষ্ট হয়েছে। এ আর রহমানের কোনো গানের সঙ্গে যদি এরকম হতো, তবে উনি কী বলতেন?’
বিষয়টি নিয়ে নেটদুনিয়ায় জোর চর্চা চললেও এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি এ আর রহমান। এমনকি মুখে কুলুপ এঁটেছেন সিনেমার নির্মাতা-অভিনয়শিল্পীরাও।
ঢাকা/শান্ত